ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

গোপীবাগে ছয় খুন: সাত বছরেও তদন্ত শেষ হয়নি

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৮, ২১ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৬:০৬, ২১ ডিসেম্বর ২০২০
গোপীবাগে ছয় খুন: সাত বছরেও তদন্ত শেষ হয়নি

রাজধানীর ওয়ারীর গোপীবাগে পীর লুৎফর রহমান ফারুকসহ ৬ জন নির্মমভাবে খুনের অভিযোগে দায়ের করা মামলার তদন্ত এখনো শেষ হয়নি।  লুৎফর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহ আল ফারুক আক্ষেপ করে বলেন, সাত বছর চলে গেলো। বাবা, ভাইসহ প্রিয়জনদের হত্যার বিচার পেলাম না।

২০১৩ সালের ২১ ডিসেম্বর গোপীবাগের বাসায় লুৎফর রহমান ফারুকসহ ৬ জন খুন হন।  সেই ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত ৭ বছরেও শেষ হয়নি।  কবে শেষ হবে তাও বলতে পারছেন না তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। এ পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য প্রায় ১০৯ বার সময় নিয়েছে বিভিন্ন তদন্ত সংস্থা।  মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। 

সর্বশেষ রোববার (২০ ডিসেম্বর) তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ধার্য ছিল।  কিন্তু এদিন কাউন্টার টেররিজম ইউনিট প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কনক বড়ুয়া আগামী ১৯ জানুয়ারি প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন।

মামলা সম্পর্কে বাদী ও নিহত লুৎফর রহমান ফারুকের ছেলে আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ৭ বছর হয়ে গেলো, এখনো মামলার তদন্তই শেষ হলো না।  আর বিচার তো দূরের কথা। মামলার কোনো অগ্রগতি নাই। নতুন তদন্ত কর্মকর্তা আসে আবার চেঞ্জ হয়।  এভাবেই চলছে মামলা।  কবে শেষ হবে তদন্ত আর কবে পাবো বিচার।

তিনি বলেন, বাবা, বড় ভাকে হারিয়েছি। বাবার পরে ভাইয়ের স্থান। সেটা গোছাতে অনেক কষ্ট হয়েছে। জীবন কারো জন্য থেমে থাকে না। কিন্তু প্রিয় মানুষদের অভাব অনুভব হয় ক্ষণে ক্ষণে।

আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি, উপস্থাপক মাওলানা ফারুকী হত্যাসহ অনেক আলোচিত মামলার তদন্তই শেষ হচ্ছে না। এমন অমানবিক একটা ঘটনার বিচার হলে খুশি হবো।

মা সালমা বেগমের প্রসঙ্গে আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, স্বামী-সন্তান হারানোর কষ্ট কেউ ভুলতে পারে না।  মায়ের ক্ষেত্রেও সেটা হয়েছে।  মা এখনো কাঁদেন তাদের জন্য। আশায় আছেন, হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজার।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিটিটিসির পুলিশ পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সপ্তাহখানেক হলো মামলার তদন্তভার আমাকে দেওয়া হয়েছে। মামলার কাগজপত্র দেখলাম।  এ বিষয়ে আমি এখন কিছু বলতে পারছি না। তবে তদন্ত শেষ করার জন্য যা যা করার দরকার, করবো।

আসামি গোলাম সারওয়ার রাহাত ও আজমির অমিতের আইনজীবী মামুন মিয়া বলেন, আসামিরা ভিকটিমাইজড। তাদের নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে। মামলার তদন্ত শেষ হচ্ছে না। আমরাও চাই, মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ হোক। সুষ্ঠু তদন্ত শেষে যারা মিথ্যাভাবে ভিকটিমাইজড তারা অব্যাহতি পাবেন।  আর যদি কেউ ঘটনার সাথে জড়িত থাকে তাহলে তাদের বিচার হবে।

পীর লুৎফর রহমান ফারুকসহ ছয়জন নির্মমভাবে খুনের ঘটনায় তার ছেলে আব্দুল্লাহ আল ফারুক ২০১৩ সালের ২১ ডিসেম্বর ওয়ারী থানায় মামলা করেন।

জানা গেছে, এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৯ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- হাদিসুর রহমান সাগর, জুলফিকার বিন সাদ ওরফে আবু ওয়াক্কাস, মামুনুর রশীদ রিপন, সৈয়দ জিয়াউল ইসলাম ওরফে জিতু ওরফে নিরব ওরফে নিয়ন ওরফে হিমু, সৈয়দ আল আমিন, তরিকুল ইসলাম, আবু রায়হান ওরফে মাহমুদ ওরফে আ. হাদী, মো. আজমির অমিত ও মো. গোলাম সরোয়ার।  আজমির অমিত ও গোলাম সরোয়ার জামিনে আছেন। ৭ আসামি কারাগারে আছেন।

মামুন/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়