ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

আমার জন্য বিয়ে যেন আটকে না থাকে : ইনু

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৭, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫  
আমার জন্য বিয়ে যেন আটকে না থাকে : ইনু

আদালতে হাসানুল হক ইনু (ফাইল ফটো)

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন হাসানুল হক ইনুর ভাতিজি। আত্মীয়রা চেয়েছিলেন তার উপস্থিতিতে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করতে। তবে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন তিনি। তার কারণে যেন বিয়ে আটকে না থাকে। শুভ কাজ দ্রুত শেষ করতে বলেছেন ইনু।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর থানাধীন গোল চত্বর এলাকায় গুলিতে নিহত আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী হত্যা মামলায় রিমান্ড শুনানির জন্য তাকে আদালতে হাজির করা হয়। আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আইনজীবীর সাথে কথোপকথনের সময় একথা জানান তিনি। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির ইন্সপেক্টর নাসির উদ্দিন সরকার তার এবং রাশেদ খান মেননেন ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। যাত্রাবাড়ি থানার দুই মামলায় সাবেক ওসি আবুল হাসানকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়।

এদিন সকাল ১০ টা ৫৫ মিনিটের দিকে তাদের আদালতে তোলা হয়। কাঠগড়ায় উঠানোর পর ইনু ও রাশেদ খান মেনন তাদের আইনজীবীর সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। ইনু তার আইনজীবী মোহাম্মদ সেলিমের সাথে কথোপকথনে বলেন, “আমি কারাগারে আছি। ভাতিজির বিয়ে যেন আটকে না থাকে। আগামীকাল বিয়ের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। তাদেরকে বলে দিও, আমি কারাগারে থাকলেও বিয়ের অনুষ্ঠানে যেন করে ফেলে। শুভ কাজে দেরি করার দরকার নেই।”

১১ টা ১০ মিনিটে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি.এম ফারহান ইশতিয়াক এজলাসে ওঠেন। প্রথমেই আবুল হাসানকে গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানি হয়। পরে মিরপুর থানার আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী হত্যা মামলায় ইনু ও মেননের রিমান্ড শুনানি শুরু হয়। তখন কাঠগড়ায় দুজন পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা। কিছুক্ষণ পর ইনু মেননের কাছে এগিয়ে যান। ইনুর কথা শুনে হাসতে থাকেন মেনন। শুনানি শেষে আদালত তাদের এ মামলায় তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তারপর পুলিশ প্রহরায় আদালত থেকে নিচে নামানো হয়। 

এদিকে শুনানিতে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, “ছাত্র আন্দোলনে গণভবনে একটি মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জামাত শিবিরকে নিষিদ্ধসহ গুলি করার নির্দেশ প্রদান করা হয়। সেখানে তারা ছিলেন এবং সম্মতি দেন। তাদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। তাহলে আরও তথ্য বের হবে।”

হাসানুল হক ইনুর আইনজীবী মোহাম্মদ সেলিম বলেন, “ইনু ছয় বারের এমপি ছিলেন। বয়স্ক লোক, উনার চিকিৎসা করা প্রয়োজন। উনি ৫০টির বেশি মামলার আসামি। জাসদ থেকে দলীয় সিদ্ধান্ত হয় গভমেন্টে যে ৩০ পার্সেন্ট বা ৫৬ পার্সেন্ট কোটা আছে সেটা যৌক্তিক নয়। তাকে একমাত্র রাজনৈতিক কারণে আটক করা হয়েছে। উনি একজন ক্যারিশমাটিক লোক। দশজন ফুটবলারের মধ্যে একজন। পাকিস্তান আমলে দুই নম্বর গোল রক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।”

এর উত্তরে ওমর ফারুক বলেন, “২০ হাজারের মতো লোক বিভিন্নভাবে গুলি করে হত্যা ও আহত করা হয়েছে। লাখ লাখ মিথ্যা মামলা মানুষকে দেয়া হয়েছে। তিনটা নির্বাচন প্রহসন করে করেছে। ডামি নির্বাচন করেছে। তারা মন্ত্রিসভায় শপথ গ্রহণ করে একটি পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের পাপের স্টেশন হিসেবে বাংলাদেশকে তুলে ধরেছে। বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে হাসিনাকে প্রতিদিন খুশি করে রাখা, তোষামোদ করেছে। আপনারা দেখেছেন আজকে জুলাই বিপ্লবের আন্দোলনের সময় ছাত্রদের উপরে কিভাবে গুলি করে হাজার হাজার মানুষকে পঙ্গু করা হয়েছে। গুলি করে যখন শিশু বাচ্চাদের পাখির মতো গুলি করে মারা হয়। একটা ভ্যান গাড়িতে বাচ্চাদের লাশ স্তুপ করে পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। একজন পুলিশ কর্মকর্তা তার বাচ্চাকে ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে খুঁজে পায়না। এভাবে বাংলাদেশকে একটা লাশের শহর বা দেশ বানিয়ে ফেলা হয়েছিল। তখন শেখ হাসিনাকে এমন হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাকে অভয় দেওয়া হয়। এরা দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে নেমেছে। জনগণের কাছে এদের আর খাওয়ানো যাবে না। এদের চরিত্র ও মনোভাব সবাই বুঝে গেছে।”

তিনি বলেন, “একইদিনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পালিয়ে যায়, বাংলাদেশের চিফ জাস্টিস পালিয়ে যায়, বায়তুল মোকাররমের ইমাম পালিয়ে যায়, এখন ঢাকা বারের পিপিও পালিয়ে যায়, ৩০০ এমপি পালিয়ে যায়। এমন বাংলাদেশ তারা তৈরি করেছিল। স্বৈরাচার এরশাদ তো পালিয়ে যায় নাই কিন্তু এরা দেশ থেকে পালিয়ে চলে গেছে। এদের বিচার এদেশের মাটিতে হবে এরা এই ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত।”

ঢাকা/মামুন/টিপু

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়