ঢাকা     সোমবার   ০৬ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

‘সমাজে অবহেলার পাত্র হয়ে গেছি’

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২২, ২৪ নভেম্বর ২০২২  
‘সমাজে অবহেলার পাত্র হয়ে গেছি’

মিরাজুল ইসলাম মিরাজ

জন্ম থেকেই অভাব-অনটনের সঙ্গে লড়াই করেই মিরাজের বেড়ে ওঠা। তার বয়সী ছেলেরা যখন স্কুলে যেত সে তখন ক্ষুধার জ্বালা মেটানোর লড়াইয়ে থাকতো ব্যস্ত। তবুও তার মনে স্বপ্ন ছিলো চাকরি করবে, সংসার হবে। কোনো রকমে কেটে যাবে বাকিটা সময়। সেই স্বপ্নের তাড়নায় তাজরীনে হয় মিরাজের ঠিকানা।

ভালোই চলছিল। কিন্তু সেই দিনের সেই আগুন, সব কেড়ে নিয়েছে। বেঁচে থাকলেও অর্থ সংকটে চলছে না সংসার। সমাজের বোঝা মিরাজকে এখন বইতে হচ্ছে অবহেলার যন্ত্রণা।

আরও পড়ুন: তাজরীন ট্র্যাজেডি মামলা, ১০ বছরেও শেষ হয়নি তদন্ত

২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর ঢাকা জেলার আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন ফ্যাশন গার্মেন্টস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুনে পুড়ে ১১২ শ্রমিকের মৃত্যু হয়। আহত হন ১০৪ শ্রমিক। তাদের মধ্যে একজন মিরাজুল ইসলাম। অগ্নিকাণ্ড থেকে নিজেকে বাঁচাতে ৫ম তলা থেকে লাফ দেন তিনি। এতে আহত হন।

মিরাজ বলেন, গরীবের সংসারে জন্ম হয়েছে। অভাব-অনটন লেগেই থাকতো। পড়ালেখাও করতে পারিনি। ৭ম শ্রেণিতে পড়াশোনা করেছি। এরপর অভাবের কারণে গ্রামের বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর থেকে ঢাকায় চলে আসি। গার্মেন্টসের কাজ করি। ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর তাজরীনে গার্মেন্টসে ৫ম তলায় কাজ করছিলাম। হঠাৎ শুনি আগুন লেগেছে। বাঁচতে জানালার গ্রিল ভেঙে নিচে লাফ দেয়। জেনারেটরের সামনে এসে পড়ি। এরপর ৮দিন পর জ্ঞান ফেরে। বাঁচার কথা ছিলো না। আল্লাহ বাঁচিয়েছেন।

তিনি বলেন, ওই দুর্ঘটনায় ডান হাত ভেঙে গেছে। পা, কোমরে আঘাত পাই। কাজ করার চেষ্টা করি, কিন্তু পারি না। কোনো কাজই করতে পারি না। সমাজের কাছে এখন অবহেলার পাত্র হয়ে গেছি।

নিজের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে দেলোয়ার বলেন, আমার এই অবস্থা হওয়ার পর স্ত্রীর আয়ে সংসার চলতো। এখন স্ত্রীরও চাকরি নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। তাই মঙ্গলবার ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে চলে এসেছি। এখন কীভাবে সংসার চলবে সেই চিন্তায় আছি। এক ছেলে মাদ্রায় পড়ছে। আরেক ছেলের বয়স আড়াই বছর। সবকিছু নিয়ে চিন্তায় আছি। কোনো সাহায্য সহযোগিতাও পাচ্ছি না। আমার মতো অনেকেরই এই অবস্থা। সরকার যেন আমাদের বিষয়টা দেখে।

/মামুন/সাইফ/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়