ঢাকা     রোববার   ১৯ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

তৃষ্ণার্ত ট্রেনযাত্রীদের পানি পান করিয়ে প্রশংসিত টিটিই মিঠু

পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:০৪, ৫ মে ২০২৪  
তৃষ্ণার্ত ট্রেনযাত্রীদের পানি পান করিয়ে প্রশংসিত টিটিই মিঠু

ট্রেনযাত্রীদের মাঝে ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশনে পানি বিতরণ করছেন টিটিই আব্দুল আলীম মিঠু।

পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশনের টিউবওয়েলে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় পানি ওঠে না প্রায় দুই মাস। ফলে অকেজো সবগুলো টিউবওয়েল।

এদিকে ঈশ্বরদীতে প্রতিদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ থেকে ৪২ ডিগ্রিতে ওঠানামা করছে। তীব্র তাপপ্রবাহে হাঁসফাঁস করছে মানুষ।

এমন অবস্থায় ট্রেনে ভ্রমণকারী শত শত সাধারণ ট্রেনযাত্রী প্রতিদিন ট্রেন থেকে নেমে টিউবওয়েল থেকে পানি তুলতে গিয়ে ব্যর্থ হচ্ছেন। শিশু বৃদ্ধদের নিয়ে পড়ছেন মহাবিপাকে।

ট্রেন যাত্রীদের এমন কষ্টের দৃশ্য দেখে নিজেকে স্থির রাখতে পারেননি ঈশ্বরদী রেলওয়ের একজন মানবিক টিকিট পরিদর্শক (জ্যেষ্ঠ টিটিই) আব্দুল আলীম মিঠু। তিনি ব্যাক্তিগত উদ্যোগে বাড়ি থেকে পানি এনে ট্রেন যাত্রীদের পান করানোর মানবিক উদ্যোগ নিয়েছেন।

টিটিই মিঠু প্রতিদিন তৃষ্ণার্ত ট্রেনযাত্রীদের এই পানি পানের ব্যবস্থা করায় এই গরমে ট্রেনযাত্রীরা পানির কষ্ট থেকে অনেকটা মুক্তি পেয়েছেন।
ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে কোনো ট্রেন এসে থামলেই বড় বড় পানির বোতল থেকে গ্লাসে ও ছোট বোতলে ঢেলে ট্রেনযাত্রীদের পানি খাওয়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন টিটিই মিঠু।

ট্রেনযাত্রীরা বলেন, ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমেই এক-দু গ্লাস সুপেয় ঠান্ডা পানি পান করতে পারছি। শুকিয়ে যাওয়া গলাটা ভেজাতে পারছি এই প্রচন্ড তাপপ্রবাহের মধ্যে এটা অনেক বড় উপকার।

ট্রেনযাত্রী রায়হান কবির ওই টিটিইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, পানি পানের এই ব্যবস্থা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষেরই করা উচিত ছিল, সেখানে একজন টিটিই নিজ উদ্যোগে এই মানবিক কাজ করছেন তাকে ধন্যবাদ।

এ বিষয়ে ঈশ্বরদী রেলের সিনিয়র টিটিই আব্দুল আলীম বিশ্বাস মিঠু বলেন, ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশন দেশের অন্যতম বড় ও ব্যস্ততম স্টেশন। এই স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০টি ট্রেন চলাচল করে। অথচ এই স্টেশনের একমাত্র টিউবওয়েলটি দীর্ঘদিন ধরে অচল হয়ে আছে। দাবদাহ শুরুর পর থেকে পানি ওঠে না। এই অবস্থায় প্রতিদিন ট্রেন যাত্রীরা যখন ট্রেন থেকে নেমে টিউবওয়েল থেকে পানি না পেয়ে হতাশ হন, সে দৃশ্য দেখে আমার কষ্ট হয়।

তিনি আরও বলেন, সে কারণে ব্যাক্তিগতভাবে বড় বড় পানির জার ও বোতল বাজার থেকে কিনে বাড়ি থেকে তা ভর্তি করে স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষমান ও ট্রেন থেকে নামা যাত্রীদের পানি পান করানোর এই ব্যবস্থা নিয়েছি। এতে আমি মানসিকভাবে অন্যরকম প্রশান্তি অনুভব করি।

পাকশী পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) অসিম কুমার তালুকদার বলেন, আমি নিজেও ব্যাক্তিগত উদ্যোগে ইতোমধ্যে চলন্ত ট্রেনের যাত্রীদের শরবত পান করানোর ব্যবস্থা নিয়েছি। টিটিই মিঠুর এই মানবিক উদ্যোগের কথাও আমি জেনেছি। তার উদ্যোগ প্রশংসনীয়। গরমে সকলেরই এ ধরনের মানবিক উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।

শাহীন/ফয়সাল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়