ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ঢাকার কাঁচাবাজারে চাঁদাবাজি বন্ধ হলে দ্রব্যমূল্য কমবে: সাঈদ খোকন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৩৪, ১৮ মে ২০২৪  
ঢাকার কাঁচাবাজারে চাঁদাবাজি বন্ধ হলে দ্রব্যমূল্য কমবে: সাঈদ খোকন

জাতীয় প্রেস ক্লাবে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে সাঈদ খোকন

ঢাকার কাঁচাবাজারে সিটি টোলের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ করলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। তিনি বলেছেন, ‘কিছুদিন আগেও ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫০ টাকা ছিল। গরিব-দুখী মানুষ তা কিনে খেতে পারতে। এখন সেই ব্রয়লার মুরগি ২২৫ থেকে ২৫০ টাকায় চলে গেল। এটাকে কমানো সম্ভব; যদি কাঁচাবাজারগুলোতে চাঁদাবাজিটা বন্ধ করতে পারি।’

শনিবার (১৮ মে) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র।

‘এগিয়ে ছিল দক্ষিণ ঢাকা, স্মৃতির পাতায় ফিরে দেখা’ শীর্ষক এ মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন। ডিএসসিসির মেয়রের দায়িত্ব পালনকালে মোহাম্মদ সাঈদ খোকন তার সময়কালে ডিএসসিসিতে যেসব উন্নয়নকাজ করেছেন, তা ভিডিও ডকুমেন্টারির মাধ্যমে তুলে ধরেন।

পরে প্রশ্নোত্তর পর্বে মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, ‘আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সিটি টোলের নামে চাঁদাবাজি বন্ধের আহ্বান জানিয়ে আসছি। আমার সংসদীয় এলাকার থানা-পুলিশ যখন চাঁদাবাজি বন্ধ করতে যায়, তখন চাঁদাবাজরা সংশ্লিষ্ট করপোরেশনের একটা কাগজ (সিটি টোল) দেখায় যে, তারা বৈধতা নিয়ে এই চাঁদাবাজিটা করছে। অর্থাৎ সিটি টোলের একটা প্রটেকশন তারা পায়। এই চাঁদাবাজি বন্ধ হলে কাঁচাবাজারের শাক-সবজি থেকে শুরু করে মাছ, মাংস কম দামে কিনতে পারবেন নগরবাসী।’

এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, সিটি করপোরেশন হচ্ছে সেবামূলক প্রতিষ্ঠান, এটি ব্যবসায়িক কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। সেবামূলক প্রতিষ্ঠান বিভিন্নভাবে রাজস্ব আহরণ করে জনগণকে সেবা দিতে। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো লাভ-লোকসানের ভিত্তিতে পরিচালিত হবে। সরকারের সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো সেবা নিশ্চিত করার ভিত্তিতে পরিচালিত হবে। সে কারণে দৃষ্টিভঙ্গির একটি বড় পার্থক্য আছে। 

তিনি বলেন, সিটি টোল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আদর্শ কর তফসিলে আছে। আমার সময়ে কিন্তু আমি সিটি টোল আরোপ করিনি। আজকে শহরের বিভিন্ন মোড়ে দেখবেন, লাঠি হাতে বাঁশি বাজিয়ে রিকশা, টেম্পু, বাস, ভ্যান থামিয়ে সিটি টোলের নামে চাঁদাবাজি হচ্ছে। আমার সময় কর্তৃত্ব থাকা সত্ত্বেও আমি এই কাজটি করিনি, যাতে নাগরিকদের ভোগান্তি না হয়, বিভ্রান্তির মধ্যে না পড়েন, অসহায় হয়ে না পড়েন।

আগে দক্ষিণ সিটিতে অবকাঠামো উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রচুর বরাদ্দ দিয়েছেন, জানিয়ে মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, ‘আমার সময়কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী জনদুর্ভোগ কমানো ছিল আমার মূল দায়িত্ব। মেয়র থাকাকালীন প্রধানমন্ত্রী আমাকে প্রচুর উন্নয়নমূলক কাজের জন্য বরাদ্দ দিয়েছেন। সিটি করপোরেশনকে চাঁদাবাজি করতে হয়নি।’

ঢাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা নিয়ে দক্ষিণ সিটি কর্তৃপক্ষ মনগড়া বক্তব্য দিয়েছে, অভিযোগ করে মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, দক্ষিণ সিটির দায়িত্বশীল এক ব্যক্তি কয়েক দিন আগে গণমাধ্যমে বলেছেন, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ঢাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৪২ হাজার কম ছিল। অথচ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন। এর মধ্যে ঢাকা শহরে রোগী ছিল ৫১ হাজার ৮১০ আর বাইরে ৪৯ হাজার জন। অন্যদিকে, ২০২৩ সালে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে আক্রান্ত হন ১ লাখ ১০ হাজার ৮ জন। এছাড়া, গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকাতেই ৯৮০ জন মারা যান। এ হিসেবে ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ঢাকায় ৫৮ হাজার ১৯৮ জন ডেঙ্গু রোগী বেশি ছিল।

মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, ‘আমি দক্ষিণ সিটির মেয়র থাকা অবস্থায় ২০১৯ সালে ঢাকা শহরে ব্যাপক হারে এডিস মশার বিস্তার ঘটে। তখন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। এ চেষ্টায় কোনো ত্রুটি রাখিনি। ডেঙ্গু আক্রান্ত নগরবাসীকে রেখে পরিবার নিয়ে বিদেশ ভ্রমণ করিনি।’ 

আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাঈদ খোকন প্রার্থী হতে উচ্ছুক কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার প্রিয় নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি চান, তা হলে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, ইনশাআল্লাহ।’

 পারভেজ/রফিক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়