ঢাকা     সোমবার   ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২২ ১৪৩১

জুলাইয়ের গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হবে: আইন উপদেষ্টা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৬, ১৪ আগস্ট ২০২৪   আপডেট: ১৪:১৮, ১৪ আগস্ট ২০২৪
জুলাইয়ের গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হবে: আইন উপদেষ্টা

ড. আসিফ নজরুল

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, জুলাইয়ের গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করা সম্ভব। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেই হবে।

বুধবার (১৪ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এই কথা বলেন।

আসিফ নজরুল বলেন, গণহত্যা ও গুলি বর্ষণের বিচার হবে মামলা হচ্ছে। মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিচার করা যায় কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে তদন্ত হবে।

জাতিসংঘের অধীনে তদন্ত টিম কাজ করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ যারা যারা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। 

‘আপনাদেরকে আমরা বলতে চাই, ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন আছে। এটা পরে ২০০৯ ও ২০১৩-তে সংশোধন হয়েছে। এই আইনে আমরা জুলাই গণহত্যা, জুলাই গণহত্যা বলতে আমি আগস্ট মাসের প্রথম পাঁচ দিনের হত্যার কথা বলছি, এর জন্য দায়ী যে ব্যক্তিবর্গ আছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ওনাদের বিচারের জন্য আমরা ইতিমধ্যে একটা ছোটখাট গবেষণার মতো করেছি। আমরা গবেষণা করে দেখেছি, এই আইনের অধীনে এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা যারা বিভিন্ন আদেশ দিয়েছেন, সহযোগিতা করেছেন, তাদের সকলকে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব,’ ব‌লেও ম‌নে ক‌রেন আইন উপ‌দেষ্টা।

তি‌নি বলেন, আপনারা জানেন এখানে (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল) একটা তদন্ত সংস্থা রয়েছে, একটা প্রসিকিউশন টিম আছে। ‌এগুলোকে আমরা রি-অর্গানাইজ করার চেষ্টা করছি। আদালত একটু পরে করবো।

উপদেষ্টা বলেন, জাতিসংঘ থেকে আমাদের বারবার সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বিচারের ক্ষেত্রে আমরা সত্যিকারের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের টিম জাতিসংঘের সর্বাত্মক তত্ত্বাবধানে কাজ করবে। সেই লক্ষ্যে সমস্ত উদ্যোগ গ্রহণ করবো। ইতিমধ্যে এখানে জাতিসংঘের যে আবাসিক প্রতিনিধি আছে, সিদ্ধান্ত নিয়েছি তার সঙ্গে মিটিং করবো। তারিখ এখনো ঠিক হয়নি। তার কাছে সহযোগিতা চাইবো। এছাড়া আরও উচ্চপর্যায়ে থেকে জাতিসংঘের বিভিন্ন কনসার্ন এজেন্সি আছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। আশা করছি দ্রুত আমরা শুরু করতে পারবো।

‘এই বিচারের আওতায় বিগত পর্যায়ের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখে ওনাদেরও বিচার করা সম্ভব বলে এটা আমরা মনে করছি। ভিকটিম পরিবারের ন্যায়বিচার পাওয়ার সবচেয়ে বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে,’ যোগ ক‌রেন তি‌নি।

উপদেষ্টা বলেন, এখন তো শুধু পুলিশ আর ছাত্রলীগের অপরাধ দেখলে হবে না। যাদের আদেশ নির্দেশে তারা করেছে, সেটা সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিও যদি হয়, সেটাও এই আইনের আওতায় বিচার করা সম্ভব। বিদায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী বা অন্যদেরও যদি দায়-দায়িত্ব থাকে আমরা সেটা পর্যন্ত খতিয়ে দেখবো।

এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হবে সেটা ক্যাটাগরিক্যালি বলতে পারেন। এর আগে দেখেছি এ ট্রাইব্যুনালে বিচারের ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে আইনজীবী আনার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আসতে দেওয়া হয়নি। বিষয়টির দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, আমরা কাউকে বাধা দেবো না। অনেক আগাম কথা বলে দিচ্ছি, প্রথম হবে তদন্ত, তারপরে হচ্ছে প্রসিকিউশন। অন্য যেকোনো দেশের আইনজীবী যারা আসতে চান জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের পক্ষে, আমরা তাদের কোনো বাধা দেবো না।

‘আয়না ঘরে যারা নির্যাতিত হয়েছেন, তাদেরও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসার সুযোগ রয়েছে,’ ব‌লেও জানান আসিফ নজরুল।

/নঈমুদ্দীন/সাইফ/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়