যারা কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, নির্বাচনে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে: জামায়াত
‘যারা কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, তাদেরকে এদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষ কোনোভাবেই গ্রহণ করবে না বরং আগামী নির্বাচনে জনগণ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করবে।’
ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে শনিবার (১২ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর মগবাজারে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপিকে ইঙ্গিত করে দলের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “অপশাসন-দুঃশাসন এবং জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা আওয়ামী লীগ ১৫ বছর ক্ষমতায় টিকে ছিল।তারা নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য জনগণের ওপর দীর্ঘ পরিসরে জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছিল। কিন্তু তাদের শেষ রক্ষা হয়নি বরং ছাত্র-ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মুখে তাদেরকে লজ্জাজনকভাবে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হয়েছে।”
“আজ যারা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য দিবাস্বপ্নে বিভোর, তারা যদি পতিত স্বৈরাচারের পরিণতি থেকে শিক্ষা গ্রহণ না করে, তাহলে তারা ১৫ মাসও ক্ষমতায় টিকতে পারবে না। পতিত ফ্যাসিবাদীরা ২৮ অক্টোবর প্রকাশ্য দিবালোকে রাজপথে পিটিয়ে হত্যা করে লাশের ওপর পৈশাচিক নৃত্য চালিয়েছিল। তাদের শাসনামলে জনগণের ওপর হেলমেট বাহিনী লেলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন তাদের অনুপস্থিতিতে বড় পাথর বাহিনী আবির্ভাব ঘটেছে। তারাই মিডফোর্টে ব্যবসায়ীকে পাথর মেরে হত্যা করে নিজেদের বর্বরতার জানান দিয়েছে।”
রেজাউল করিম বলেন,“অবিলম্বে সকল প্রকার বর্বরতা বন্ধ করতে হবে। গণহত্যার বিচার করতে হবে। রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও নির্বাচনে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত করতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকেই। অন্যথায় আবু সাঈদ-মুগ্ধের উত্তরসূরীরা ঘরে বসে তামাশা দেখবে না।”
আবু সাঈদ-মুগ্ধের দেশে কোনো প্রকার সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দখলদার, হেলমেট বাহিনী, রড বাহিনী ও পাথর বাহিনীর স্থান নেই উল্লেখ করে জামায়াত নেতা বলেন, “জনগণ এদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলবে। আমরা কোন বিশেষ দল বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নই বরং আমরা সকল প্রকার অপরাধ ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে”।
তিনি প্রশাসনের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, “অপরাধ দমনে ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে জনপ্রশাসনকে জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে। এতে যদি আপনারা ভয় পান তাহলে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে পদত্যাগ করুন। বিপ্লবীরা নতুন করে জনপ্রশাসনকে গণবান্ধব করে ঢেলে সাজাবে, যাতে নতুন প্রশাসন খুনি, চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে”।
তিনি বিপ্লবীদের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, ইয়াছিন আরাফাত, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য হেদায়েত উল্লাহ, ইঞ্জিনিয়ার নোমান আহমেদি প্রমুখ।
এর আগে সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে দলটির নেতাকর্মীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি তেজগাঁও সাতরাস্তা থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে মগবাজারে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি