ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ধমক দিয়ে রাজনীতি চলবে না : কাদের

নৃপেন রায় || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১২, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ধমক দিয়ে রাজনীতি চলবে না : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছারের কথায় বিরক্তি প্রকাশ করে প্রকাশ্য সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ধমক দিয়ে রাজনীতি চলবে না।’

রোববার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নতুন বহুতল ভবন নির্মাণস্থলের সামনে বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী ছিল। রাজধানীর বিভিন্ন ইউনিট থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মীরা নির্মাণসামগ্রীর ওপর দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় কয়েকজন পড়ে যাওয়ার শব্দে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।

এ ব্যাপারে ওবায়দুল কাদের বক্তব্যের এক পর্যায়ে আয়োজক সংগঠনের নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘এখানে একটি স্লিপ এসেছে। আমি আসার আগে এখানে কি কোনো গণ্ডগোল হয়েছে?

এ সময় ওবায়দুল কাদেরকে কিছু বলার চেষ্টা করেন  আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ। ওবায়দুল কাদের বলেন, তাহলে তুমি বলো। এরপর পঙ্কজ দেবনাথ বলেন, ‘নির্মাণ কাজ হচ্ছে। ওখানে আমাদের ছেলেরা দাঁড়িয়ে ছিল। পড়ে গিয়েছে, শব্দ হয়েছে। এখানে তেমন কিছু হয় নাই। অনেকে ভয়ে দৌড় দিয়েছে। মনে করেছে, কোনো হামলা-টামলা হয়েছে কি না? সাংবাদিক বন্ধুরা এখানে ছিল (মঞ্চের সামনে), আমাদের ছেলেরা দৌড়ে এদিকে এসেছে, ওরা হয়ত ব্যথা পেতে পারে। আমরা ক্ষমা চাচ্ছি। এটা তো আমাদের ক্রটি না। অভ্যন্তরীণ কোনো সংকটও না। ওখানে বাঁশ ছিল, সেখানে ছেলেরা দাঁড়িয়ে ছিল? আমরা মাইকে বারবার বলেছি, তোমরা নেমে যাও। কিন্তু তারা শোনেনি। দাঁড়াতে গিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে গেছে। এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। আর যদি সাংবাদিক বন্ধুরা আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন, আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। প্রয়োজনে আমরা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাব।

এরপর পুনরায় ওবায়দুল কাদের বলেন, কতগুলো সভায় আমি উপস্থিত ছিলাম। এ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু এভিনিউ বা অন্য কোথাও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনতার উপস্থিতিতে নাগরিক কমিটির যে ঐতিহাসিক জনসমাবেশ, সেখানে টু শব্দটি হয়নি। আমি অনেক সভা এখানে করেছি। কখনো কোনো বিশৃঙ্খলা আমি প্রকাশ্যে দেখিনি। আমি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর এই নগরী বা দেশের কোথাও আমার উপস্থিতিতে কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, কোথাও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়নি।

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা বিএনপি নই। মিটিং হলেই নিজেরা নিজেদের সঙ্গে মারামারি করে। চেয়ার ছুড়াছুড়ি করে। নেতারা মফস্বলে নেতাদের মারামারি দেখে ভয়ে ঢাকায় পালিয়ে আসেন। সেই দল আওয়ামী লীগ নয়। আজকের এখানে আসার আগে যদি কোনো বিশৃঙ্খলা হয়ে থাকে তা স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছে, এটা ভালো উদাহরণ। কোনো কারণে আজকে একটা ছোটখাটো সমস্যা হয়েছে। সভাপতি বলছে, সমস্যা হয়নি। যাই হোক, যেভাবেই হোক, কার উসকানিতে হোক, অস্বীকার করে লাভ নেই।

এ সময় মঞ্চে বসা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছার কাউকে ধমক দেওয়ার চেষ্টা করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নো নো কাওছার, ধমক দিয়ে রাজনীতি চলবে না।’

এরপর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে বিষয়টি তদন্ত করার আহ্বান জানিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, দল করলে দলের নিয়ম-শৃঙ্খলা মানতে হবে। এ ধরনের প্রকাশ্য সভায় অনেক সময় সবাইকে চিহ্নিত করাও সম্ভব হয় না। তাই কেউ কেউ অনুপ্রবেশও করতে পারে। ভবিষ্যতে খেয়াল রাখতে হবে। সামনের বছরটা নির্বাচনের বছর। পরগাছা-আগাছারা সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। কাজেই সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে।

ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য শেষ হলে পঙ্কজ দেবনাথ পুনরায় বলেন, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের সামনে যেখানে নির্মাণ সামগ্রী রয়েছে, সেখানে দাঁড়ানো আমাদের নেতাকর্মীরা স্লিপ করে পড়ে যাওয়ার পরে একটি শব্দ হয়েছে। সেই শব্দের কারণে লোকজন এদিকে ছুটে এসেছে। এখানে কোনো চেয়ার ছোড়াছুড়ি হয়নি। কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। আতঙ্ক ছিল কয়েক মিনিটের জন্য। তারপর মুহূর্তেই ঠান্ডা হয়ে গেছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ ডিসেম্বর ২০১৭/নৃপেন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়