ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

কীভাবে হয়ে উঠবেন একজন সাইবার সচেতন মা?

সাদিয়া ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:১৪, ৪ অক্টোবর ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কীভাবে হয়ে উঠবেন একজন সাইবার সচেতন মা?

মডেল: নুসরাত ও অহনা, ফটোগ্রাফি: অপূর্ব খন্দকার

সাদিয়া ইসলাম : বর্তমানে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার হাতের নাগালেই আছে ইন্টারনেট। তবে ইন্টারনেটের যেমন রয়েছে ভালো দিক, তেমনি রয়েছে বহু খারাপ দিক। তাই মায়েদেরই দায়িত্ব সন্তানদেরকে এর সকল খারাপ দিক থেকে বাঁচিয়ে রাখা।

 

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, এখন শিশুদের মধ্যে সাইবার থ্রেট এতই তাই বেড়ে গেছে যে মায়েদের এক্ষেত্রে এগিয়ে এসে সন্তানের দায়িত্ব নেয়া এখন সময়ের দাবি। মাকেই নিশ্চিন্ত হতে হবে তার সন্তান এসব বিপদ থেকে দূরে আছ।

 

কিছুদিন আগের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৬৩ শতাংশ শিশুরা তাদের ব্যক্তিগত তথ্য অনলাইনে শেয়ার করে থাকে। আরও জানা গেছে ৫৮ শতাংশ তাদের বাড়ির ঠিকানা পর্যন্ত শেয়ার করে এবং ৩৯ শতাংশ শিশুরা তাদের এ সকল কার্যকলাপ বা অনলাইনে তারা কী করছে, তা বাবা-মা কে জানায় না। আরও একটি বিস্ময়কর ব্যাপার ১২ শতাংশ শিশু যারা এই রিসার্চে অংশ নিয়েছিল তার মধ্যে ১২ শতাংশই বিভিন্ন সাইবার অ্যাটারের ভিক্টিম।

 

সাইবার অ্যাটাক বিশেষজ্ঞ অনিন্দিতা মিশ্রা বলেন, অবশ্যই প্রত্যেকটি শিশুর অনলাইনে নিজের সম্পর্কে কী তথ্য দিচ্ছে তা প্রতিটা মা এরই খেয়াল রাখতে হবে। মাকে একদম সবকিছু নখদর্পনে রাখতে হবে যেন তার সন্তান এসব বিপদ থেকে রক্ষা পায়।

 

অনেক মায়েরা এই ব্যাপারে একমত পোষণ করে। কাকলি মালিক, একজন মা বলেন, ‘আমার ১২ বছরের মেয়ের পড়াশুনার কাজে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হয়। এ ছাড়া তার ব্যক্তিগত একটি ই-মেইল আইডি আছে যা দিয়ে তার বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। আমি তাই আমার কম্পিউটার লিভিং রুমে রেখেছি। যেন সবাই তার কার্যকলাপের ওপরই নজর রাখতে পারে। আমি নিজেই তাকে যাবতীয় বিষয় শিখাই এবং এও শিখাই ইন্টারনেট যেন বুদ্ধিমানের মত ব্যবহার করে।’

 

বর্তমানে সাইবার বুলিং একটি বড় সমস্যা। এক্ষেত্রে যেটা হয় তরুণ-তরুণীদের বিভিন্ন ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়, যেমন হতে পারে তাদের থেকে কোনো সুবিধা নেয়া বা তাদের মেসেজের মাধ্যমে বিপথগামী করার চেষ্টা বা কোনো ভাইরাস পাঠানো, এ ছাড়াও আরও অনেক কিছু।

 

‘আমার ১৩ বছরের ছেলেকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ব্যবহার করা বন্ধ করতে হয়েছে বিভিন্ন সমস্যার কারণে। আমার ছেলে তার রুমে ল্যাপ্টপ ব্যবহার করত এবং সে দিনে দিনে সাইবার বুলিং এর শিকার হয়ে বিপর্যস্ত হয়ে যাচ্ছিল। আমাদের সে কখনোই বলেনি। অনেক পরে সে আমাদের জানায় যে, সে তার স্কুলের সিনিয়রদের দ্বারা ভিক্টিমাইজড হয়েছে।’ জানাচ্ছিলেন একজন মা যার ছেলের কিছু আপত্তিকর ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে তাকে বিরক্ত করা হচ্ছিল তারই স্কুলের কিছু সিনিয়রদের দ্বারা।

 

অনিন্দিতা জানান, বিভিন্নভাবে একজন মা তার সন্তানকে এসব থেকে রক্ষা করতে পারেন:

- সন্তানের সঙ্গে তার সমস্যা নিয়ে কথা বলুন। আলোচনা করুন যে তার কাছে সব কিছু ঠিক লাগছে কিনা। যদি অন্য রকম কিছু মনে হয় তাকে জিজ্ঞেস করুন সমস্যা কী।

 

- সে কোন কোন চ্যাট রুমে ভিজিট করে তা খেয়াল রাখুন।

 

- কার সঙ্গে কী কী কথা শেয়ার করছে জানতে চান। কোনো ছবি দিচ্ছে কিনা।

 

- নির্দিষ্ট কিছু চ্যাট রুমেই তাকে প্রবেশ করতে বলুন।

 

- কারও সঙ্গে নিজের আসল নাম, বয়স, স্কুল, ফোন নম্বর, বাসার ঠিকানা এসব শেয়ার করছে কিনা দেখুন।

 

- সন্তানকে ভালোবাসার সঙ্গে বুঝান। এমন একজন বন্ধু হয়ে উঠুন যেন দুজনেই দুজনকে বুঝতে পারেন।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ অক্টোবর ২০১৫/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়