ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

মেঘ দেখলেই ছুটি

অলোক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ২৬ মে ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মেঘ দেখলেই ছুটি

খোলা আকাশের নীচে গাছতলায় স্কুল চলছে ঝালকাঠির কাঠালিয়ায়

অলোক সাহা, ঝালকাঠি : মেঘ দেখলেই ছুটি। কারণ, বৃষ্টি এলেই ভিজতে হবে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের। যেখানে স্কুল চলছে খোলা আকাশের নীচে গাছতলায়, সেখানে এ ছাড়া উপায়ই বা কি! স্কুলটির অবস্থান ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলায়। ৬৮ নং পূর্ব ছিটকী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় খোলা আকাশের নিচেই চলছে এ স্কুলের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান।

 

কালবৈশাখী ঝড় ও ভূমিকম্প ভয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ছেড়ে গাছতলায় খোলা আকাশের নীচে ক্লাস করছে শিশু শিক্ষার্থীরা। স্কুলটি দীর্ঘ দিন ধরে জরাজীর্ণ হয়ে এখন ভবনটিতে বড় বড় ফাঁটল সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন সময় ধসে পড়ার শংকা রয়েছে। আর তাই শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি না নিয়ে বিদ্যালয় মাঠের একটি আম গাছের নিচে ক্লাস করছে চার শতাধিক শিক্ষার্থী।

 

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবুল হাসান তালুকদার বলেন, চলতি মাসে কয়েটি কাল বৈশাখি ঝড়ের পর গত ১২ মে দুপুরে ভূমিকম্পে নতুন করে ভবনটি কেঁপে ওঠে। তখন ছাঁদ ও দেয়ালের চুন শুরকি খসে পড়তে থাকে। এ দৃশ্য দেখে এ সময় তিনি তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষকদের সহায়তায় স্কুলের ছেলে মেয়েদের ক্লাশ থেকে বের করে আনেন। আর পরদিন থেকেই বিদ্যালয় মাঠে আম গাছের নিচেই ক্লাস নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

 

পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র হিমেল বলেন, গাছ তলার নীচে রোদ ও প্রচন্ড গরমে লেখা-পড়া করতে কষ্ট হচ্ছে। সামনে বর্ষা শুরু হবে তখন কি করে আমরা গাছের নিচে ক্লাস করবো। আমাদের এখন একটি নতুন ভবন দরকার।

 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ফেরদৌসী খানম বলেন, ‘১৯৯৫ সালে তিনটি শ্রেণি কক্ষের এ ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু গত ৩ বছর আগেই ভবনটির চুন সুরকি খসে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। আমরা প্রতি বছরই তিন মাস পর পর কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠিয়ে আসছি। সবশেষ গত ১২ মে ভবনটিতে নতুন করে ফাটল তৈরি হয় এবং ছাদ থেকে চুন সুরকি খসে পড়তে থাকলে আমারা আতংকিত হয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের বাইরে নিয়ে আসি এবং গাছতলায় ক্লাস নিতে শুরু করি। কিন্তু মেঘ দেখলেই বৃষ্টি আসতে পারে এ আশঙ্কায় শিক্ষার্থীদের ছুটি দিতে হয়। ঘটনার দিনই বিষয়টি কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো সত্ত্বেও এখনও কোন প্রতিকারের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’

 

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহ আলম খান বলেন, ‘এ বিষয়টি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমাদের জানানোর পরে আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছি।’

 

ঝালকাঠি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র হালদার বলেন, ‘খুব শীঘ্রই জেলার সকল ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।’

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঝালকাঠি/২৬ মে ২০১৫/অলোক/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়