ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ডন দাউদ না গুজমান-কে বেশি প্রভাবশালী

রাসেল পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:১৩, ১৩ জানুয়ারি ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ডন দাউদ না গুজমান-কে বেশি প্রভাবশালী

দাউদ ইব্রাহিম ও এল চাপো গুজমান

রাসেল পারভেজ : আন্ডারওয়ার্ল্ড মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিম ও হোয়াকুইন এল চাপো গুজমান স্ব স্ব অবস্থানে খুবই ক্ষমতাধর এবং প্রভাবশালী। ফোর্বস ম্যাগাজিনে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তালিকায় দুজনেরই নাম রয়েছে। এর অর্থ বিশ্বজুড়ে তারা প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে।

 

বিশ্বের ভয়ংকর এই দুই ডনের মধ্যে মিল ও অমিল দুই-ই রয়েছে। তাদের প্রভাববলয়ও আলাদা। কিন্তু দুজনই বিশ্বজুড়ে প্রভাবশালী।

 

দাউদ ইব্রাহিম ভারতীয় নাগরিক। পুরো নাম দাউদ ইব্রাহিম কাসকার। ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের রতনগিরি জেলার মুমকায় ১৯৫৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বয়সের দিক থেকে গুজমানের সঙ্গে দারুণ মিল রয়েছে দাউদের। মেক্সিকোর সিনালোয়া রাজ্যে ১৯৫৪ সালে গুজমানের জন্ম। যদিও তার জন্ম সাল নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, তবে সর্বোচ্চ দুই এক বছরের হেরফের হতে পারে। এই হিসাবে গুজমান (৬১) ও দাউদ (৬০)  প্রায় সমবয়সি। তখন কি কেউ জানতো, বিশ্বের দুই প্রান্তে এক বছরের ব্যবধানে জন্ম নিয়েছে আগামী দিনের অন্ধকার জগতের দুই রাজা!

 

গুজমানের পুরো নাম হোয়াকুইন গুজমান লোয়েরা পেরেজ। সিনালোয়া রাজ্যের এক নিভৃত গ্রামে গরিব পরিবারে জন্ম নেন তিনি। ছোটবেলায় রাস্তায় রাস্তায় ফেরি করে কমলা ও পরে গাজা বিক্রি করতেন। অপরাধপ্রবণ সেই ছেলেটি তার ৫০ বছর বয়সে বিশ্বের ভয়ংকর সন্ত্রাসী হয়ে ওঠে। যাকে যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ সন্ত্রাসী ঘোষণা করে।

 

সম্পদ ও ক্ষমতা বিস্তারের দিক থেকে এশিয়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী দাউদ ইব্রাহিম। ২০১১ সালে বিশ্বের প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় ৫৭তম স্থানে ছিলেন তিনি। এই তালিকায় ২০১০ সালে ছিলেন ৬৩তম অবস্থানে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, সন্ত্রাসী জগতের ডন হয়েও তিনি সাধারণ মানুষের মধ্যে সরবে-নিরবে কতটা প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছেন।

 

অন্যদিকে গুজমান আমেরিকার মাদকসম্রাট। বিশ্বে এত বড় মাদক চোরাচালানকারী বর্তমানে আর নেই। মেক্সিকোর উপকূলীয় ও পাহাড়ি অঞ্চলে বিশেষ করে সিনালোয়া রাজ্যে তিনি গড়ে তুলেছেন মাদকরাজ্য। বলতে গেলে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার মাদকব্যবসা তার ইশারায় চলে।

 

ফোর্বেস ম্যাগাজিনের তথ্য মতে, ২০১১ সালে গুজমানের মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল এক বিলিয়ন ডলার। তবে গত চার বছরে তার সম্পদের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। কারণ প্রতি বছর তিনি তিন বিলিয়ন ডলার মূল্যের মাদকব্যবসা করেন। সে হিসেবে তার সম্পদ এখন তিন থেকে চার বিলিয়ন ডলারের কম নয়।

 

২০১৩ সালে ফোর্বেস ম্যাগাজিনে বিশ্বের প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় ৬৭তম অবস্থানে ছিলেন গুজমান। ২০১২ সালে এই তালিকায় তিনি ৬৩তম স্থানে ছিলেন। মাদক পাচারকারী হয়েও তিনি প্রভাব বিস্তার করে বিশ্বের ঘৃণা কুঁড়িয়েছেন।

 

গুজমান অত্যন্ত ভয়ংকর সন্ত্রাসী। তিন বার গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। দুই বার জেল ভেঙে পালিয়েছেন। মেক্সিকোর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা কারাগার থেকে সুড়ঙ্গ করে পালিয়ে যান তিনি। অবশ্য তিনি আবার পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন। হলিউড অভিনেতা শেন পিন গোপনে গুজমানের সাক্ষাৎকার নিয়ে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় ফেলেছেন।

 

দাউদ ইব্রাহিমের বর্তমান অবস্থান অজ্ঞাত। তবে ভারতের দাবি, পাকিস্তানের করাচিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বহাল তরিয়তে থাকেন তিনি। যদিও পাকিস্তান এই দাবি বার বার প্রত্যাখ্যান করেছে। ১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ে হামলার মূল হোতা দাউদ ইব্রাহিম ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসী।



 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ জানুয়ারি ২০১৬/রাসেল পারভেজ/নওশের

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়