ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৯ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

যশোর কারাগারে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, দুই কারারক্ষীসহ আহত ৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৩৬, ২৭ এপ্রিল ২০২৪   আপডেট: ১০:৪৫, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
যশোর কারাগারে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, দুই কারারক্ষীসহ আহত ৭

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে হাজতিদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পাঁচজন হাজতি আহত হয়েছেন। তাদের সংঘর্ষ ঠেকাতে গিয়ে দুজন কারারক্ষী আহত হয়েছেন। পরবর্তীতে হুইসেল বাজিয়ে কারারক্ষীরা ভেতরে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের নিউ জেল এলাকায় এ সংঘর্ষ বাঁধে। 

তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন খুলনা কারা উপমহাপরিদর্শক অসীম কান্ত পাল। জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলে সূত্র জানিয়েছে। সংঘর্ষের সূত্রপাতের বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ পূর্ব কোন্দলের কথা জানিয়েছে। তবে, কারাগারের অপর একটি সূত্র বলছে, মোবাইল ফোন ব্যবহার করাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ হয়েছে।

শুক্রবার সকাল থেকেই যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে অসংখ্য দর্শনার্থী তাদের হাজতিদের সঙ্গে দেখা করার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। হঠাৎ হুইসেল বেজে ওঠে। মুহূর্তেই মানুষ দিকবিদিক ছোটাছুটি শুরু করে। দর্শনার্থীদের দ্রুত বাইরে বের করে দেওয়া হয়। অন্যদিকে, সকল কারারক্ষী তাড়াহুড়ো করে লাঠি নিয়ে কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করে। কারা কর্তৃপক্ষের এ ধরনের কার্যক্রম দেখে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়। কেউ কেউ বলতে থাকে আসামি পালিয়েছে। প্রায় দেড় ঘণ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। 

ওইসময় কারাগারে ভেতরে যাওয়া কারারক্ষী ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কারা অভ্যন্তরের নিউ জেল এলাকার সামনে সন্ত্রাসী ভাইপো রাকিব ও আরেক সন্ত্রাসী সম্রাটের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এ সময় দু'গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। শেষমেষ তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। সঙ্গে সঙ্গে হুইসেল বাজানো হয়।

পরবর্তীতে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার ও জেলার শরিফুল আলম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। একপর্যায় দ্রুতই তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে খুলনা কারা উপমহাপরিদর্শক অসীম কান্ত পাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এদিকে, কারাগারের অপর একটি সূত্র জানিয়েছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে দুজন কারারক্ষী জখম হয়েছেন। তাদেরকে কারা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, আহত হাজতিদেরও সেখানে চিকৎসা দেওয়া হয়েছে। 

সূত্র আরও জানায়, তাৎক্ষণিক কারাকর্তৃপক্ষ জড়িত সাত-আটজনকে চিহ্নিত করেছেন। এদের মধ্যে কয়েকজনকে পৃথক স্থানে রাখা হয়েছে। তাদের বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে। 

এ বিষয়ে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সহকারী সার্জন সাজ্জাদ হোসেন বলেন, দুজন কারারক্ষী ও ছয়-সাতজন হাজতি কারা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা আশঙ্কামুক্ত ও সুস্থ রয়েছেন।

কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার বলেন, ঘটনাটি সামান্য। তবে, আকস্মিকভাবে তাদের একজন কারারক্ষী অ্যালার্ট হুইসেল বাজিয়ে ফেলেন। এতে করে বিষয়টি বড় আকারে রূপ নেয়। 

তিনি বলেন, মূলত যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে বর্তমানে শহরের দাগী কয়েকজন সন্ত্রাসী রয়েছে। তাদের মধ্যে ভাইপো রাকিব অন্যতম। এদের দু'টি গ্রুপের সদস্যদের বাইরেই কোন্দল ছিল। যা কারাগারের ভেতরে ক্ষোভ মেটানোর চেষ্টা করেছে। যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। 

তিনি বলেন, কারারক্ষীদের উপর হামলা চালানো হয়নি। মূলত তাড়াহুড়ো করে কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করতে গিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি কারাগারে দুইজন কারারক্ষীর মধ্যে ডিউটিরত অবস্থায় মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই দুই কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়। তার রেশ কাটতে না কাটতেই কারা অভ্যন্তরে হাজতিদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলো।

রিটন/টিপু 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়