যুবককে জোর করে বিয়ে করানোর অভিযোগ
রাজশাহীতে এক যুবককে তুলে নিয়ে জোর করে বিয়ে করানোর অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার রাজশাহী শহরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ জানান ভুক্তভোগী সুরুজ বাসফর (২৬)।
গত ৪ ডিসেম্বর সুরুজ বাসফরকে জোর করে বিয়ে করানো হয়। এ ঘটনায় ৬ জানুয়ারি রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।
সুরুজ বাসফর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী। তার গ্রামের বাড়ি রংপুরে। তিনি রামেক হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টারে থাকেন। বাবু হেলা নামে রামেক হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারীর মেয়ের সঙ্গে তার বিয়ে দেয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সুরুজ বাসফর জানান, তিনি হাসপাতালের কোয়ার্টারে থাকেন। পাশের কোয়ার্টারে পরিবার নিয়ে থাকেন বাবু হেলা। তার স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে নন্দিনী হেলার সঙ্গে বিয়ের জন্য তাকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। তিনি (সুরুজ) সেই প্রস্তাব নাকচ করেন। কোয়ার্টার ছেড়ে দিতে নতুন বাসা খুঁজতে শুরু করেন সুরুজ। ৪ ডিসেম্বর বাবু হেলার স্ত্রী রাখি হেলা এবং মেয়ে নন্দিনী হেলা তাকে বাসা দেখানোর নাম করে হাসপাতাল থেকে ডেকে নিয়ে যান। হঠাৎ অপরিচিত দুই যুবক তাদের অটোরিকশায় ওঠেন। তারা জোর করে সুরুজকে হড়গ্রাম শিব মন্দিরে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকে সাত-আটজন যুবক অপেক্ষা করছিলেন। সে সময় মন্দিরে কোনো পুরোহিত ছিলেন না।
সুরুজ অভিযোগ করেন, মন্দিরের সামনে তাকে অস্ত্রের মুখে নন্দিনীর মাথায় সিঁদুর দিতে বাধ্য করা হয়। ছবিও তোলা হয়। এরপর থেকে প্রচার চালানো হচ্ছে, নন্দিনীর সঙ্গে সুরুজের বিয়ে হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে সুরুজ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
সুরুজ দাবি করেন, তিনি কখনো বাবু হেলার বাসায় যাননি। নন্দিনীকেও তার বাসায় নিয়ে যাননি। এই বিয়ে মানেন না বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে প্রথমে রামেক হাসপাতাল কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকের কাছে অভিযোগ করেন সুরুজ। এতে নন্দিনীর পরিবার ক্ষিপ্ত হয়। সুরুজের বোন ও মামা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে গেলে তাদেরকে গালি দেয়া হয় এবং মারধর করা হয়।
ঘটনার পরের দিন রাজপাড়া থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাতে চান সুরুজ। কিন্তু কোনো ছেলেকে তুলে নিয়ে বিয়ে করানো সম্ভব নয়, মন্তব্য করে পুলিশ অভিযোগ আমলে নেয়নি। কয়েক দফা থানায় ঘুরে তিনি অভিযোগ জানাতে পেরেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সুরুজ বাসফরের মামা তাজ এবং সহকর্মী জনি প্রামাণিক উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে বাবু হেলাকে ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।
নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি শাহাদাত হোসেন খান বলেন, নিবন্ধন না হলে তো আইনগতভাবে বিয়ের কোনো ভিত্তি নেই। আমরা একটা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাজশাহী/তানজিমুল হক/রফিক
রাইজিংবিডি.কম