স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে বিত্তবানদের সাহায্য চান নূপুর
মহাসিন আলী || রাইজিংবিডি.কম
সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গু হতে বসেছে নূপুর
সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে চলার শক্তি। পঙ্গু হতে বসেছেন মেহেরপুরের মেধাবী ছাত্রী নূপুর। উন্নত চিকিৎসার অভাবে আর কোনোদিন তিনি সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে বিত্তবানদের কাছে আর্থিক সাহায্য কামনা করছে নূপুর ও তার পরিবার।
দুর্ঘটনায় নূপুরের দুটি পা-ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ৫ লক্ষাধিক টাকা। নূপুরের বাবা মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার জোড়পুকুরিয়া গ্রামের পেঁয়াজু ব্যবসায়ী গোলাম কিবরিয়ার পক্ষে মেয়ের উন্নত চিকিৎসার ব্যয় বহন করা সম্ভব হচ্ছে না।
গাংনী মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক হারুন অর রশিদ রবি জানান, নূপুর তার কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। ২০১৯ সালে স্থানীয় জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এসএসসি পাস করেছেন তিনি।
জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসান রোহানী জানান, নূপুরের বাবা গোলাম কিবরিয়ার বসতভিটা ছাড়া আর কোনো জমি নেই। সপ্তাহে দুই দিন জোড়পুকুরিয়া হাটে পেঁয়াজু বিক্রি করে চলে তার সংসার। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছোট মেয়ে নূপুরকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন তিনি। প্রায় দুই মাস আগে তিনি নূপুরকে বিয়ে দেন সাতক্ষীরা জেলা শহরের মুঞ্জিতপুরের আব্দুল জলিলের ছেলে মামুনের সাথে। মামুন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
নূপুরের মা মর্জিনা খাতুন জানান, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে গত ১৬ জুলাই স্বামীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে জোড়পুকুরিয়া গ্রামে আসছিলেন নূপুর। যশোরের মনিরামপুর এলাকায় বেলা সাড়ে ১২টার দিকে যানজটে পড়ে দাঁড়িয়ে থাকে তাদের মোটরসাইকেল। কিছুক্ষণ পর যানজট কমলে পিছন থেকে একটি ইজিবাইক তাদের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে তাদের মোটরসাইকেল কাত হয়ে একটি ট্রাকের নিচে পড়ে। ট্রাকটি চলতে শুরু করলে চাকার নিচে পড়ে মামুনের বাম পা ভেঙে যায়। নূপুরের ডান পায়ের হাঁটুর ওপর থেকে পাতা পর্যন্ত ও বাম পায়ের পাতা ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে খুলনা সদর হাসপাতালে পৌঁছে দেয়। অ্যাম্বুলেন্সের চালক ফোন করে নূপুরের পরিবারকে দুর্ঘটনার সংবাদ জানান। অর্থের অভাবে নূপুরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য ভালো হাসপাতালে ভর্তি করতে পারেনি পরিবার।
গোলাম কিবরিয়া জানান, তার পক্ষে মেয়ের উন্নত চিকিৎসা করানো সম্ভব নয়। চিকিৎসা করাতে গিয়ে ইতোমধ্যে তিনি অনেক ঋণ করেছেন। মেয়ের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিত্তবানদের সহযোগিতা প্রয়োজন।
স্থানীয় চিকিৎসক লিটন জানান, নূপুরের দুটি পা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ৫ লক্ষাধিক টাকা প্রয়োজন। তা নাহলে সারা জীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করতে হবে নূপুরকে।
নূপুর বলেন, ‘আমি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাই। লেখাপড়া করে গরিব মা-বাবাকে সাহায্য করতে চাই। ফিরে যেতে চাই স্বামীর সংসারে। পরিবারের পক্ষে আমার উন্নত চিকিৎসার ব্যয় বহন করা সম্ভব নয়। আপনাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সহায়তা আমাকে সুস্থ করে তুলতে পারে।’
বাবা গোলাম কিবরিয়ার মোবাইল ও বিকাশ নম্বরে (০১৭২৯-৫০৩৮৫৪) আর্থিক সাহায্য পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছেন নূপুর।
মেহেরপুর/রফিক
আরো পড়ুন