ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

শিশু জিহাদ হত্যা: বাবা ও সৎ মা গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:২৪, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২০  
শিশু জিহাদ হত্যা: বাবা ও সৎ মা গ্রেপ্তার

দেড় মাস পর অজ্ঞাতনামা শিশুর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই পুলিশ। গত ১৬ জুলাই নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার রামডাঙ্গা ফরেস্ট ও সিংগাহাড়া নদীর তীরে একটি তালাবদ্ধ ট্রাংক থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। 

দীর্ঘ তদন্ত শেষে মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) হত্যাকাণ্ডের শিকার শিশুর পরিচয় ও হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বাবা ও সৎ মাসহ আরো দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পিবিআই সূত্রে জানাগেছে, গত ১৫ জুলাই একটি ট্রাংক পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়। পরদিন পুলিশ ট্রাংকটি খুলে বেডশিট ও কাঁথা মোড়ানো অবস্থায় একটি অর্ধ গলিত লাশ পায়। 

পিবিআই রংপুর ছায়া তদন্ত শুরু করে। লাশটি ঝলসানো ও অর্ধ গলিত ছিলো। তাই ফিঙ্গার প্রিন্ট গ্রহণ করা হলেও সে সময় শিশুটিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি মামলা করা হয়।

রংপুর পিবিআই পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেনের নেতৃত্বে একটি স্পেশাল টিম তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রায় এক মাস ১৭ দিন পর অপরাধের মোটিভ, প্রক্রিয়া ও মৃত ব্যক্তির পরিচয় উদ্ধার করে। একইসঙ্গে নৃশংশতম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদেরও শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। 

তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান পরিচালনা করে দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার একটি এনজিওতে কর্মরত নিহত শিশু জিহাদ (১২) এর বাবা জিয়াউর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

আটক জিয়াউর রহমানের স্বীকারোক্তি মতে দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলায় তার ভাড়া বাসা থেকে ২য় স্ত্রী শিশু জিহাদের সৎ মা আলেয়া মনি (১৯) ও তার শ্বশুর আইয়ুব আলীকে (৫৫) গ্রেপ্তার করা হয়। 

তার ভাড়া বাড়ি থেকে ইলেক্ট্রিক ওয়াটার হিটার জব্দ করা হয়। জিহাদকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে ওই ইলেকট্রিক হিটারে পানি গরম করে তা দিয়ে শিশুটির দেহ ঝলসে দেওয়া হয়। 

পিবিআই জানায়, গ্রেপ্তারকৃতদের তাৎক্ষণিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে শিশু জিহাদের সৎ মা আলেয়া মনি এবং তার বাবা জিয়াউর রহমানের সঙ্গে শিশু জিহাদের বনিবনা না হওয়ায় তারা একত্রে পরিকল্পিতভাবে গত ১৪ জুলাই রাতে ঘুমন্ত জিহাদকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। 

বাসায় ব্যবহৃত একটি স্টিলের ট্র্যাংকে শিশু জিহাদের লাশ ঢোকানো হয়। আইয়ুব আলী পার্শ্ববর্তী মীম ভ্যারাইটিজ স্টোর হতে দুটি চাইনিজ তালা কিনে ট্রাংকটি তালাবদ্ধ করে। পরে লাশ ভর্তি ট্রাংকটি অপসারণের জন্য বিরল হাসপাতালের গেটের সামনে থেকে একটি নীল রঙের একটি ছোট পিক আপ ভ্যান ১৩ হাজার টাকায় ভাড়া করা হয়। পরে ট্রাংকটি পিকআপে করে নদীর ধারে নিয়ে ফেলে রাখা হয়। ওই পিকআপের মালিক ও ড্রাইভার ইসমাইলকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিহাদ হত্যাকাণ্ডে এখন পর্যন্ত চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পিবিআই পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন জানান, মামলাটি পিবিআই-এর এসআই মো. ইকরামুল হক মামলাটির তদন্ত করছেন। তাকে পিবিআই-এর একটি স্পেশাল টিম সহায়তা করছেন। মামলার তদন্ত অব্যহত আছে।

নজরুল মৃধা/সনি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়