প্রাণ আর প্রকৃতির মিলনমেলা আড়িয়ল বিলে
ওপরে নীল আকাশ। নিচে স্বচ্ছ জলরাশি। সে জলে ফুটেছে শাপলা-শালুকসহ অসংখ্য জলজ উদ্ভিদ। তাতে বাস করছে নানা প্রজাতির মাছ। দৃষ্টির সীমানা পর্যন্ত সবুজের ছড়াছড়ি। এসবের মাঝে আবার শঙ্খচিল, কানাবক, মাছরাঙ্গা, ডাহুক, পাতিহাঁসসহ হরেক রকমের পাখির আনাগোনা। প্রাণ আর প্রকৃতির মিলনমেলার নয়নাভিরাম চিত্র মুন্সীগঞ্জের আড়িয়ল বিল জুড়ে। প্রকৃতির এই নান্দনিকতা নয়ন জুড়াবে যে কারো।
ঢাকার নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলা এবং মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর ও সিরাজদীখান উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত আড়িয়ল বিল। পদ্মা, ধলেশ্বরী, ইছামতি নদীর ১ লাখ ৬৭ হাজার একর জমিজুড়ে রয়েছে আড়িয়ল বিল। এই বিলের ওপর নির্ভর করে চলে স্থানীয় অনেকের জীবন ও জীবিকা।
আড়িয়ল বিলে এখন অথৈয় পানি। আড়িয়ল বিলের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখন প্রতিদিন শত শত পর্যটক আসছেন। ময়ূরপঙ্খী নাও, ট্রলার ও ছোট বড় বিভিন্ন নৌকায় করে দিনভর বিলের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটছেন ভ্রমণ পিপাসুরা। উপভোগ করছেন আড়িয়ল বিলের সৌন্দর্য।
বিলের স্বচ্ছ পানিতে ফুটে আছে শাপলা। সবজি হিসেবে চাহিদা থাকায় নিম্ন আয়ের শতশত মানুষ এখন বিলের শাপলা তুলে বিক্রি করছেন। বিলে দেখা যাবে শাপলাভর্তি ডিঙি কোষা নৌকার সমাহার।
আড়িয়ল বিলে ছোট বড় মিলে প্রায় হাজার খানেকের মত ডেঙ্গা (পুকুর) রয়েছে। ডাঙ্গাগুলোর চারপাশ ঘিরে রয়েছে কলাগাছিয়া, নৈমুদ্দিন, পশুরাম, বাগমারা, সাগরদীঘি, আঠারোপাকি, বৈরাগীর ডাঙ্গা, পদ্মবতী, কালাচাঁন দীঘি, নারিকেল গাছিয়া, তালগাছিয়া, ঝরঝরিয়াসহ নানা রকমের গাছ।
বর্ষাকালে আড়িয়ল বিলের ডাঙ্গাগুলোয় প্রচুর মাছ পড়ে। ভরা বর্ষায় ডেঙ্গাপারে বেসাল পেতে স্থানীয় জেলেদের মাছ ধরার অপূর্ব দৃশ্যে দুচোখ জুড়াবে। এছাড়া, পুরো আড়িয়ল বিল জুড়েই শতশত ভেসাল দেখা যাবে। আড়িয়ল বিলের তাজা মাছও পছন্দমত কেনা যাবে।
বিলের কিছু কিছু জায়গাজুড়ে রয়েছে কচুরিপানা। সেসব কচুরিপানা সংগ্রহ করে এলাকার মানুষ নিজেদের বাড়ির সামনে নিয়ে স্তুপ করে রাখে। পানি নেমে গেলে এসব কচুরিপানা জমিতে মিশে তৈরি হয় জৈব সার, তারপর সেখানে করা হয় সবজির চাষ।
শুকনো মৌসুমে এ বিলের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন মনে হবে। চোখ জুড়িয়ে যাবে সবুজ ফসলে। আলু, মিষ্টিকুমড়া, সবজিসহ কিছু অংশে ধানচাষও হয়।
ঢাকা/ইভা
আরো পড়ুন