প্রতিবন্ধী ছেলের হুইল চেয়ারের জন্য মায়ের আকুতি
আবদুল মালেক || রাইজিংবিডি.কম
এক আকাশ স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার তামিম ইকবালের নামের সঙ্গে মিল রেখে প্রথম সন্তানের নাম রেখেছেন তামিম।
কিন্তু দিন গড়াবার সঙ্গে সঙ্গে সেই স্বপ্নটা দুঃস্বপ্নে পরিণত হয় মা রিনা বেগমের। এক সময় তিনি জানতে পারেন তার বড় ছেলে বাক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী। মুহূর্তে সব কিছু এলোমেলো হয়ে যায় তার। তারপরও সব কষ্ট সহ্য করে পরম আদরে সেই সন্তানকে লালন-পালন করেছেন তিনি।
বলছিলাম ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড় মানিকা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. বশির এবং রিনা বেগম দম্পতির বড় ছেলে তামিমের কথা। ছেলেটির বর্তমান বয়স ১৯ বছর। এখনও তিনি কিছু বলতে পারেন না, নিজে হাঁটাচলা করতে পারেন না। শুধু তার হাতের ইশারার কথা বাবা-মা কিছুটা বুঝতে পারেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, দরিদ্র এই দম্পতির প্রতিবন্ধী ছেলেটি ঘরের এক কোনায় সবসময় বসে থাকেন। তিনি ঠিকমতো হাঁটাচলাও করতে পারেন না। ছেলেটি নতুন কোনো খেলনা পেলে অনেক খুশি হন তিনি। কিন্তু অভাবের কারণে বাবা-মা তাকে সেটাও কিনে দিতে পারেন না। শুধু তাই নয়, তার চলাফেরার জন্য নেই হুইল চেয়ার। তাই সব সময় প্রতিবন্ধী এই ছেলেকে তার মায়ের ওপর নির্ভর করতে হয়। মা কোনো কাজে ব্যস্ত থাকলে তিনি আর চলাফেরা করতে পারে না। এ কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়তে হয় তাকে।
তামিমের দরিদ্র ড্রাইভার বাবা যা আয় করেন তা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চলে তাদের। তাই প্রতিবন্ধী ছেলের জন্য একটা হুইল চেয়ার কিনতে পারেন না পরিবারটি।
তামিমের মা রিনা বেগম বলেন, ‘আমাদের প্রথম ছেলে তামিম জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। আল্লাহ যা দিয়েছে তাই মেনে ওকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছি। ছেলেটি অনেক বড় হয়েছে কিন্তু এখনও তার খাওয়া থেকে শুরু করে সব কিছু আমার করতে হয়। আমাকে ছাড়া সে চলাফেরা করতে পারে না। রান্নাঘরে আমি রান্না করতে গেলে একা হাঁটতে গিয়ে সে বেশ কয়েকবার মাথায় ফাটিয়ে ফেলেছে। এরকম অবস্থাতেও আমরা তার চলাফেরা করার জন্য একটি হুইল চেয়ার কিনে দিতে পারি নাই। এটা আমার কাছে খুব কষ্টের। সমাজের কোনো হৃদয়বান মানুষ যদি আমার এই সন্তানের জন্য একটি হুইল চেয়ার কিনে দিতো তাহলে সে ভাল থাকতো।’
ভোলা/বুলাকী
আরো পড়ুন