রেশমের ঐতিহ্য ফেরাতে আরও লুম চালুর উদ্যোগ

রেশমের হারানো ঐতিহ্য ফেরাতে রাজশাহী রেশম কারখানায় আরও লুম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

বর্তমানে কারখানাটিতে ১৯টি লুম চালু রয়েছে। রেশমের কাপড়ও উৎপাদন করা হচ্ছে। এখন উৎপাদন বৃদ্ধি করতে আরও বেশি সংখ্যক লুম চালুর চেষ্টা করা হচ্ছে। 

লুমগুলো চালু করতে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের সিনিয়র সহসভাপতি ও রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা কারখানা পরিদর্শন করেন। 

লোকসান হচ্ছে এমন কারণ দেখিয়ে ২০০২ সালে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকার এই রেশম কারখানা বন্ধ করে দেয়। তখন এই কারখানার ঋণের বোঝা ছিল এক কোটি ৩০ লাখ টাকা। এরপর সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা রেশম বোর্ডের সহ-সভাপতি হয়েই কারখানাটি চালুর জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেন। তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় অবশেষে ১৬ বছর পর ২০১৮ সালে কারখানাটিতে প্রথম ছয়টি লুম চালু করা হয়। ধীরে ধীরে মোট ১৯টি লুম চালু করা হয়েছে। এখন আরও বেশি সংখ্যক লুম চালুর ব্যাপারে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলো।

এসময় বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক আবদুল হাকিমসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও গবেষকেরা উপস্থিত ছিলেন। 

কারখানা পরিদর্শন শেষে সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘আমরা পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমে ছয়টি লুম চালু করেছিলাম। পরে সেটি ১৯টিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন আরও বেশি সংখ্যক লুম চালু করতে চাই। সেজন্যই কারখানার লুমগুলো দেখে এলাম।’

তিনি জানান, বর্তমানে কারখানায় যে কাপড় উৎপাদন হচ্ছে তা ছোট একটি শো-রুমে রাখা হচ্ছে। আরও বেশি লুম চালু করে আমরা শো-রুমটিও বড় করতে চাই। এর পাশাপাশি অনলাইনে রেশম পণ্য বিক্রিরও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। রেশম বোর্ডের আগামী বোর্ডসভায় সব চূড়ান্ত হয়ে যাবে। রেশমের হারানো ঐতিহ্য আবারও ফিরিয়ে আনতে চাই।

রাজশাহী মহানগরীর শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় ১৯৬১ সালে সাড়ে ১৫ বিঘা জমির ওপর স্থাপিত হয় এই রেশম কারখানা। কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়ার সময় সেখানে মোট ৬৩টি লুম ছিল। এর মধ্যে উৎপাদন চলতো পুরনো ৩৫টি লুমে। নতুন ২৮টি লুম চালুর আগেই কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। 

বন্ধের আগে কারখানাটি বছরে এক লাখ ৬ হাজার মিটার রেশম কাপড় উৎপাদন করত। কারখানায় ৬৩টি লুম চালু করা গেলে বছরে কাপড় উৎপাদন হবে দুই লাখ ৮৭ হাজার মিটার।