ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

১৪ ছাত্রের চুল কেটে দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জন

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৩, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১   আপডেট: ০০:৪৪, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১
১৪ ছাত্রের চুল কেটে দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জন

চুল কেটে দেওয়ার প্রতিবাদে সব পরীক্ষা, ক্লাস বর্জন করেন শিক্ষার্থীরা (ছবি: রাইজিংবিডি)

সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ জন ছাত্রের মাথার চুল কেটে দেওয়ার প্রতিবাদে সব পরীক্ষা, ক্লাস বর্জন, একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলার শাহজাদপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষা, ক্লাস বর্জন এবং একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

লাঞ্ছিত একাধিক শিক্ষার্থী জানান, কয়েক দিন আগে ক্লাস চলাকালে ওই শিক্ষক চুল বড় রাখার বিষয়ে ছাত্রদের বকাঝকা করেন। তার ভয়ে সবাই পরদিনই চুল ছোট করেন।  রোববার দুপুরে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিচিতি বিষয়ের ফাইনাল পরীক্ষার হলে অংশগ্রহণের সময় শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় আগে থেকেই দরজার সামনে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন কাঁচি হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন।  যাদের চুল মুঠোর মধ্যে ধরা গেছে, তাদের মাথার সামনের বেশ খানিকটা চুল তিনি কাঁচি দিয়ে কেটে দেন।

এদিকে, চুল কেটে দেওয়ায় অপমান সহ্য করতে না পেরে নাজমুল হাসান তুহিন (২৫) নামে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র অতিমাত্রায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনার পর সোমবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে পরীক্ষা বর্জন করে।  পরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করার জন্য বিসিক বাসস্ট্যান্ড এলাকার শাহজাদপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস-১ এর গেটে জড়ো হলে ওই শিক্ষক তাদের পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে পরীক্ষার হলে যেতে বাধ্য করে।

আন্দোলন চলাকালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান রওশন আলম বলেন, আপনাদের দাবি লিখিত জমা দিন। প্রক্টরিয়াল বডি আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

ছবি ফেসবুক থেকে নেওয়া

এসব বিষয় অস্বীকার করে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন বলেন, কয়েকদিন আগে কিছু ছাত্র আমার কাছে এসে পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে বলেছিল। আমি এতে রাজি হইনি। হয়তো বা সেই রাগে এ ধরনের অপপ্রচার চালিয়েছে। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, অন্য বিভাগের ছাত্ররা মিথ্যা গুজব ছড়াতে ফেসবুকে এসব দিয়েছে। আমার বিভাগের কোনো ছাত্র দেয়নি।

এ বিষয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এই প্রথম শুনলাম। এ ধরনের কোনো লিখিত অভিযোগও পাইনি। ভুক্তভোগীরা এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অদিত্য/এসবি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়