ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে পড়ল বিদ্যালয়ের রেলিং

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫৭, ২৮ ডিসেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৭:০১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২১
নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে পড়ল বিদ্যালয়ের রেলিং

প্রয়োজনের তুলনায় কম ও নিম্নমানের উপাদান ব্যবহার করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই একটি চারতলা বিদ্যালয় ভবনের রেলিং ভেঙে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। 

এ ঘটনায় সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তেজখালি ইউনিয়নে তেজখালি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন চারতলা ভবন নির্মাণের দরপত্র আহবান করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয়ের চারতলা ভবনটি নির্মাণের কাজটি পান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেসার্স জে বি বিল্ডার্স এন্টারপ্রাইজন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। 

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জে বি বিল্ডার্স এন্টারপ্রাইজ কাজটি পেলেও বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের কাজটি মূলত করছেন ঠিকাদার মোর্শেদুল ইসলাম। কিন্তু ঠিকাদারের অবহেলার কারণে নির্মাণকাজ এখনো অসমাপ্ত রয়েছে। সম্পন্ন হওয়া নির্মাণকাজের মধ্যে রয়েছে বিদ্যালয়ের চারতলার নতুন ভবনের মেঝ, বারান্দার রেলিং, দরজার ফ্রেম ও মেঝের মোজাইকের কাজ। কিন্তু নির্মাণ উপকরণ প্রয়োজনীয় অনুপাতে না দেওয়ায় এসব কাজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। 

রেলিংগুলোতে প্রয়োজনীয় রড না থাকায় তাতে ফাটল দেখা দিয়েছে। সিমেন্টের পরিমাণ কম দেওয়ায় পলেস্তরও খসে পড়ছে। ফলে নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন শেষ ত্রুটিগুলো সংশোধনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে অনুরোধ জানানর বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, ‘২০১৯ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয়। দুই বছরের কাজটি তৃতীয় বছরে গড়িয়েছে। একাধিকবার তাগাদা দেওয়া হলেও ঠিকাদার তালবাহনা করেছেন।’

বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি কবির বলেন, ‘দুইদিন আগে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি ও এলাকার লোকজন বারান্দার রেলিংয়ে ফাটল দেখতে পান। সোমবার বিদ্যালয় কমিটির লোকজন গিয়ে ওই ফাঁটলে ধাক্কা দেন। এতেই বিদ্যালয়ের বারান্দার রেলিং ভেঙে পড়ে। নিম্নমানের কাজের জন্যই এমন হয়েছে। তাই সোমবার জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।’

ঠিকাদার মোর্শেদুল ইসলাম বলেন, ‘কাজে কোনো অনিয়ম হয়নি। করোনার কারণে কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে। তবে নির্মাণকাজের প্রায় ৮০ শতাংশই শেষ হয়েছে।‘ 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কেউ যদি হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে তাহলে রেলিং তো ভাঙবেই। ক্ষতিগ্রস্থ অংশ মেরামত করে দেওয়া হবে।’

উপজেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী শাহনেওয়াজ বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে নিম্নমানের কাজ হয়েছে। বারান্দার রেলিং নির্মাণে চারটির রডের পরিবর্তে দুটি-তিনটি করে রড দিয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিদ্যালয়ের নিচতলা থেকে চারতলা পর্যন্ত ২৪টি ব্লক আকারের রেলিং রয়েছে। সেগুলো ভাঙ্গার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নতুন করে রেলিং নির্মাণ করা হবে।’

মাইনুদ্দীন/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়