ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

একসঙ্গে ৩ বন্ধুর মৃত্যু, গ্রামজুড়ে শোক 

পঞ্চগড় প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২৫, ৫ মে ২০২২   আপডেট: ১৪:৩৫, ৫ মে ২০২২
একসঙ্গে ৩ বন্ধুর মৃত্যু, গ্রামজুড়ে শোক 

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩ বন্ধু

নতুন, শিশির এবং আবু বক্কর ছোটবেলা থেকেই বন্ধু। সম্পর্কে তারা নিকটাত্মীয় এবং প্রতিবেশী। তাদের বেড়ে ওঠাও একসঙ্গে। চলাফেরা ঘোরাঘুরিও করতেন একসঙ্গেই। সর্বশেষ তিন বন্ধু মিলে মোটরসাইকেলে বেড়াতে বের হন। কিন্তু তাদের আর ঘরে ফেরা হয়নি। সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজনেরই প্রাণহানি।একসঙ্গে হয়েছে জানাজাও। গ্রামজুড়ে চলছে শোকের মাতম। ঈদ আনন্দ যেন বিষাদে পরিণত পরিবারগুলোতে।

আরও পড়ুন: উত্তরায় প্রাইভেটকার-অটোরিকশা সংঘর্ষ, নিহত ২ 

বৃহস্পতিবার (৫ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় জানাজা শেষে তিনজনকেই পাশাপাশি দাফন করা হয়েছে স্থানীয় কবরস্থানে।

নিহতদের বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের খালপাড়া গ্রামে। সিয়াম ওরফে নতুন (১৭), সেখানকার পয়কাম ইসলামের ছেলে। আবু বক্কর (১৭), বাবার নাম কাব্বাস আলী। একই গ্রামের আরেকজন শিশির (১৮)। তার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর এখানেই নানার বাড়িতে থাকতেন তিনি।

স্থানীয়রা জানান, সিয়াম ওরফে নতুন ঢাকায় থাকেন। ঈদের আগের দিন এসেছেন বাড়িতে। আর শিশির এবার এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তি হয়েছেন। আবু বক্কর দশম শ্রেণির ছাত্র। তিনজনে খুব ভালো বন্ধু। শিশির এবং আবু বক্কর একসঙ্গেই চলাফেরা করেন। নতুন বাড়ি এলে তিনিও যোগ হন তাদের সঙ্গে। হঠাৎ করে তিনজন তরুণের অস্বাভাবিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তারা।

তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট নতুন। তার বড় ভাই সবুজ হোসেন বলেন, দুপুরেও তিন ভাই একসঙ্গে ছিলাম। কে জানে বিকেল হতে না হতে আদরের ছোট ভাইকে চিরতরে হারিয়ে ফেলবো। নতুন ঢাকায় থাকে, খুব ভালো মোটরসাইকেল চালাতে জানে। ঈদ উপলক্ষে বাড়িতে এসেছে মোটরসাইকেল নিয়েই। কিন্তু কালকে আমার ভাই মোটরসাইকেল ড্রাইভ করেনি। আমার ভাই চালালে এমনটা হতো না।

নিহত আবু বক্করের বাবা কাব্বাস আলী বলেন, আমার চার ছেলের মধ্যে সবার ছোট আবু বক্কর। খুব নম্র, ভদ্র ছিল ছেলেটা। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তো। স্বপ্ন ছিল ইঞ্জিনিয়ার হবে, এজন্য অষ্টম শ্রেণি পাস করে টেকনিক্যাল স্কুলে ভর্তি হয়েছিল। সব স্বপ্ন নিমিষেই শেষ হয়ে গেলো।

আবু বক্করের বড় ভাই হাবিবুল বাশার বলেন, আমাদের খুব আদরের ছিল আবু বক্কর। পুরো বাড়ি মাতিয়ে রাখতো সে। খেলাধুলাতেও খুব ভালো ছিল। ভাই নাই এটা মেনে নিতে পারছি না।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার (৪ মে) বিকালে ঈদ উপলক্ষে তিন বন্ধু মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি থেকে মডেলহাট-তালমা সড়ক হয়ে অমরখানাা ইউনিয়নে অবস্থিত মহারাজার দিঘীর পাড়ে যাচ্ছিলেন। জমাদারপাড়া নামক এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় তাদের। এতে সড়কে ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তারা। 

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞা বলেন, বুধবার বিকেলে সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের পরিবার থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। মরদেহগুলোর সুরতহাল শেষে ওদিনই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। 

নাঈম/এইচএম

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়