ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

এগিয়ে যাচ্ছে চাকমা তরুণ-তরুণীরা 

তারেকুর রহমান, কক্সবাজার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪৪, ৯ মে ২০২২   আপডেট: ১৭:৫৯, ৯ মে ২০২২
এগিয়ে যাচ্ছে চাকমা তরুণ-তরুণীরা 

বাংলাদেশে ৪৫টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাস। এরমধ্যে সর্ববৃহৎ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী চাকমা। চাকমাদের নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, সাহিত্য ও ঐতিহ্য রয়েছে। 

কক্সবাজারে বসবাসরত চাকমা জনগোষ্ঠীর জীবিকার প্রধান উৎস জুম চাষ। পাহাড়ে চাষ করে তারা সংসার চালায়। এ জনগোষ্ঠীর অনেকেই এখন আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছে। তবে জুমচাষের ওপর নির্ভরশীলতা কমেছে। লেখাপড়া করে চাকরির দিকে ঝুঁকছে চাকমা তরুণরা। চাকমাদের মধ্যে শিক্ষার হারও বাড়ছে।

কক্সবাজারের উখিয়া জালিয়াপালংয়ে মনখালী চাকমা পল্লিতে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, প্রত্যেক পরিবারে কেউ না কেউ শিক্ষিত। অধিকাংশ পরিবারের ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়ছে।  

মনখালী চাকমা পল্লির বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মংপোছা বলেন, ‘চাকমাদের নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রয়েছে। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আমরা এসব চর্চা করি। বর্ষবরণ উৎসব বিজুসহ বিভিন্ন উৎসবে চাকমা মেয়েরা নিজস্ব পেশাক পিনোন-হাদি, যুবকেরা টন্নে হানি, জুন্নাছিলুম, ধুতি পরে।’ 

তিনি বলেন, ‘আধুনিকতার ছোঁয়া চাকমা পল্লিতে লেগেছে। আগে গরু-মহিষ দিয়ে হাল চাষ করতাম। এখন মেশিনের ট্রাক্টর দিয়ে করি। আমাদের ছেলে-মেয়েরা স্কুল-কলেজমুখী হচ্ছে। শিক্ষার হার আগের চেয়ে অনেকগুণ বেড়েছে।’ 

সরকারি চাকরীজীবী লতাইনু চাকমা বলেন, 'মা-বাবাকে সাহায্যের পাশাপাশি অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করেছি। অনেকদূর হেঁটে স্কুল-কলেজে যেতে হয়েছে। অনেক কষ্টে সরকারি চাকরিতে সুযোগ পেয়েছি। আমি ছাড়াও এখানকার অনেকে বিভিন্ন বাহিনীতে চাকরি করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকমা পল্লির ছেলে-মেয়েরা পড়ছে।’ 

চাকমা পল্লি থেকে বেড়ে ওঠা বাশিমং চাকমা বলেন, ‘বাবা-মা আমাদের নিয়ে স্বপ্ন দেখেছেন। তারা কষ্ট করে আমাদের বড় করেছেন। আমরা সরকারি চাকরি করে মা-বাবার মুখে হাসি ফুটাতে পেরে নিজেদের ধন্য মনে করছি।’

সদ্য মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পাওয়া নেপাল চাকমা বলেন, ‘মা-বাবা রাত-দিন খেটে লেখাপড়ার খরচ জুগিয়েছেন। তাদের কষ্টের ফল হিসেবে আমার পরিবারের একজন বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত। আরেকজন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং আমার কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ হয়েছে। আমরা আমাদের ঐতিহ্য ধরে রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’ 

আগে চাকমা পল্লিতে অভিভাবকেরা অসচেতন থাকায় শিক্ষার হার কম ছিল। এখন শিক্ষার হার বাড়ছে। প্রতিদিন দলবেঁধে ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যায়। তারা তাদের ভাষা, সংস্কৃতি, সাহিত্যের সঙ্গে বাংলা-ইংরেজি শিখে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিনিধিত্ব করার চেষ্টা করছে। 

/বকুল/ 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়