ঢাকা     শনিবার   ১১ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৮ ১৪৩১

পর্যাপ্ত পশু মজুত থাকলেও দাম নিয়ে শঙ্কা

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৩৮, ৩ জুলাই ২০২২   আপডেট: ২০:৫৯, ৩ জুলাই ২০২২
পর্যাপ্ত পশু মজুত থাকলেও দাম নিয়ে শঙ্কা

ঈদ উল আজহাকে সামনে রেখে সাতক্ষীরায় বেড়েছে দেশি গরুর কদর। এছাড়া এ বছর চাহিদার চেয়ে বেশি কোরবানি যোগ্য পশু মজুত রয়েছে জেলায়। ফলে এবার ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন জেলার খামারিরা। 

খামারিরা বলছেন, চলতি বছর গো-খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গরু মোটাতাজাকরণে ব্যয় বেড়েছে অনেক। সে অনুযায়ী দাম না পেলে তাদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে।

এবছর সাতক্ষীরা জেলায় ১ লাখ ৮ হাজার পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এবার কোরবানিতে জেলার চাহিদা মিটিয়ে পশু বাইরের অন্যসব জেলাতে পাঠানো সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন প্রাণী সম্পদ বিভাগ। 

সাতক্ষীরা জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ জানায়, জেলায়  এবছর কোরবানির পশুর সম্ভাব্য চাহিদা ধরা হয়েছে ৬০ হাজার ৯০৭টি। আর কোরবানির জন্য মোট পশু মজুত রয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৫টি পশু। যা চাহিদার চেয়ে ৪৭ হাজার ৯৮টি বেশি। জেলার সাত উপজেলার ৯ হাজার ৯৩০টি খামারসহ পারিবারিকভাবে এসব পশু লালন পালন করা হয়েছে। এর মধ্যে গরু ২৮ হাজার ৮০৩টি, ছাগল ৭৪ হাজার ৪৯৯টি, ভেড়া ৩ হাজার ৭০৭টি ও মহিষ রয়েছে ৯৯৬টি। 

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার রহিমা এগ্রো ফার্মের মালিক মোহাম্মদ আলতাফ হোসেন জানান, তার খামারে ২৭ টি গরু আছে। তার মধ্যে মেসি নামের সবচেয়ে বড় গরুর ওজন ১৬ মন। দাম ধরা হয়েছে ১০ লাখ টাকা। এছাড়া  সবচেয়ে ছোট গরুর দাম ধরা হয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার । 

তিনি আরো জানান, গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় গরুর পেছনে খরচও বেড়েছে। তাই কোরবানির বাজারে খামারিরা বেশি দাম চাইবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দ্রব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতিতে মানুষের হাতেও টাকা কম। তাই পশুর দাম কেমন উঠবে তা নিয়ে তিনি শঙ্কিত রয়েছেন।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার গরু খামারি শহিদুল ইসলাম জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে গরু পালন করে আসছেন তিনি। বর্তমানে তার খামারে দেশি ও বিদেশি জাতের ১৮টি গরু রয়েছে। গরু কিনতে এখনো বাইরে থেকে কোনো ব্যাপারি আসেননি। স্থানীয় পর্যায়ে কয়েকজন ব্যপারি আসলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী দাম বলছেন না তারা। 

সাতক্ষীরা জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. এবিএম আব্দুর রউফ জানান, এ বছর সাতক্ষীরা জেলার চাহিদার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ কোরবানির পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কোরবানির পশু কেনাবেচা শুরু হয়েছে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৪৮ হাজার পশু বেশি থাকবে।

তিনি আরো জানান, সারা বছর খামারিরা কোরবানির অপেক্ষায় থাকেন। এসময় পশু বিক্রি করে তাদের কিছুটা লাভ হয়। তবে একদিকে চাহিদার চেয়ে পশুর যোগান বেশি তার ওপর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা হওয়ায় অপেক্ষাকৃত কম দামে পশু বিক্রি হচ্ছে। যার প্রভাব কিছুটা হলেও জেলার বাজারে পড়বে। তবে পদ্মা সেতু হওয়ায় খামারিরা ইচ্ছে করলে কম সময়ের ভেতরে দেশের বিভিন্ন হাটবাজারে তাদের গরু সরবরাহ করতে পারবেন। 

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, কোরবানি ঈদকে ঘিরে সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করা হচ্ছে। জেলার কোনো সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে চোরাই গরু দেশে প্রবেশ ঠেকাতে এবার কঠোর অবস্থানে রয়েছে জেলা প্রশাসন। 

তিনি আরো জানান, বিজিবিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তারা যেন সীমান্ত এলাকায় টহল জোরদার করে। আর হাটগুলোতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা ইতোমধ্যেই গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত সার্বক্ষণিক মাঠে থাকবে।

শাহীন/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ