ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

সাংবাদিক টিটুর মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন

বরগুনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৭, ২৮ জুলাই ২০২২   আপডেট: ১৫:২৬, ২৮ জুলাই ২০২২
সাংবাদিক টিটুর মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন

সাংবাদিক টিটুর মামলা প্রতাহারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে বরগুনার সংবাদিকরা অংশ নেন

একাত্তর টিভি ও রাইজিংবিডির বরগুনা প্রতিনিধি  ইমরান হোসেন টিটুর নামে দায়েরকৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বরগুনায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে বরগুনার টাউন হল অগ্নি ৭১ এর সামনে বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। পরে মামলার সঠিক তদন্তের জন্য বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি বরাবর স্মারকলিপি দেন সাংবাদিক নেতারা। 

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার প্রধান বাঁধা হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এ আইন দুর্নীতিবাজদের এক শক্তিশালী হাতিয়ার। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগের ফলে অপরাধীদের বিচার না হয়ে উল্টো সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। অতিবিলম্বে এ আইন বাতিল করতে সাংবাদিকরা সরকারের কাছে জানাচ্ছে। 

গত ১ মার্চ পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ইয়ার উদ্দিন খলিফার মাজারের দুর্নীতি নিয়ে বরগুনা ইমরান হোসেন টিটুর অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার হয় একাত্তর টিভিতে। মাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও মির্জাগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মল্লিকের ভাগ্নে বাদল (বাক্স বাদল) প্রতিবেদনটি না করার জন্য একাত্তর টেলিভিশনের বরগুনা অফিসে এসে ঘুষ দিতে চান ইমরান হোসেন টিটুকে। ঘুষ দিতে চাওয়ার ভিডিওসহ প্রতিবেদনটি একাত্তর টিভিতে প্রচার হলে বিভিন্ন মহলে নিন্দার ঝড় ওঠে। এরপর এপ্রিল মাসের ৫ তারিখ বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন ঘুষ দিতে আসা বাদল ফকির। এরপর থেকেই বরগুনা ও পটুয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলার সাংবাদিকরা ইমরান হোসেন টিটুর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে কর্মসূচি পালন করছেন।

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘সাংবাদিক ইমরান হোসেন টিটুকে হয়রানি করতে এ মামলা করা হয়েছে। এর আগেও এই সাংবাদিক বিভিন্ন দুর্নীতিবাজদের মুখোশ উন্মোচন করেছেন। মামলা করে কখনোই সাংবাদিকদের লেখা বন্ধ করা যায়নি, যাবে না।’ 

বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন ফসল বলেন, ‘সাংবাদিকরা অনিয়ম, দুর্নীতি ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভূমিকা রেখে যাবেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। সরকার শিগগিরই এ আইন বাতিল করবেন বলে আমরা সাংবাদিকরা আশা করছি। এ আইন বাতিল না হলে বাদল বাক্সের মত দুর্নীতিবাজরা দুর্নীতি করেও পার পেয়ে যাবেন।’

বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মুজিবুল হক কিসলু বলেন, ‘সাংবাদিক টিটুর প্রতিবেদনটি কয়েকবার দেখেছি। প্রতিবেদনে দেখা যায় বাদল ইমরান হোসেন টিটুকে ঘুষ দিতে চাচ্ছেন। ঘুষ দিতে চাওয়ার ভিডিওটি প্রতিবেদনে দেখানোয় বাদল মিথ্যা অভিযোগ এনে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছেন। পুলিশের কাছে অনুরোধ করবো এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার শিকার সাংবাদিক ইমরান হোসেন টিটু বলেন, ‘এই বাদল আমাকে প্রতিবেদন বন্ধ করার জন্য ঘুষ দিতে চেয়েছে, আমি ঘুষ না নিয়ে ঘুষ দিতে চাওয়ার কথোপকথনের ভিডিও যুক্ত করে প্রতিবেদন প্রচার করি। এটা কি আমার অন্যায়? তিনি ঘুষ দিতে চেয়েছেন এটা অন্যায় নয়? আমি তদন্তকারী পুলিশ, প্রশাসন, আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা রাখি। আমি আশা করি, পুলিশ সঠিক তদন্ত করে প্রতিবেদন দেবে এবং এই মামলা থেকে আমি মুক্তি পাবো।’

বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়ন আয়োজিত এই কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করে উপস্থিত ছিলেন বরগুনা রিপোটার্স ইউনিটি, বেতাগী প্রেসক্লাব, পাথরঘাটা উপজেলা প্রেসক্লাব, তালতলী প্রেসক্লাব, তালতলী সাংবাদিক ফোরাম, মির্জাগঞ্জ প্রেসক্লাব, পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সদস্যরা।

ইমরান/ মাসুদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়