হাডুডু খেলায় মাতলো দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা 

তাদের নেই দৃষ্টি শক্তি। দেখতে পারেন না সুন্দর পৃথিবী। অনুমান ও অন্যের সহযোগিতা পথ চলেন। তবুও থেমে নেই তাদের এগিয়ে চলা। আর তাই দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের নিয়ে টাঙ্গাইলে অনুষ্ঠিত হলো গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী হাডুডু খেলা। 

৫৪ তম বিশ্ব সাদাছড়ি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে শনিবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ১১ টার দিকে এ খেলার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধার অতিথি ছিলেন টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আমিনুল ইসলাম।

‘দৃষ্টি জয়ে ব্যবহার করি, প্রযুক্তি নির্ভর সাদাছড়ি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে টাঙ্গাইল আউটার স্টেডিয়ামে গ্রামীণ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন কেন্দ্র এ খেলার আয়োজন করে।

গ্রামীণ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন কেন্দ্রের সভাপতি আবরার এইচকে ইউসুফ জাইয়ের তনুর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন অলোক হেলথ কেয়ার এন্ড হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লোকমান হোসেন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মির্জা মঈনুল ইসলাম লিন্টু প্রমুখ।

খেলা দেখতে আসা শিক্ষক আনিছুর রহমান, ব্যবসায়ী হুমায়ন সিকদার ও গৃহিনী শেফালি বেগম বলেন, জীবনে অনেক খেলাই দেখেছি। প্রতিটি খেলাই অনেক উপভোগ করি। এর আগে শুনেছি দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের হাডুডু খেলা হয়, তবে কোনো দিন দেখিনি। আজকে তাদের এই খেলা দেখে খুব ভালো লাগলো। আমাদের দাবি দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের যেন যোগ্যতা অনুযায়ী সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরে কাজে লাগানোর সুযোগ সৃষ্টি করা হয়। 

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী খেলোয়াড় ওয়াহেদ আলী, আলী আকবর, তোরাব আলী ও আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিগত ৩৫ বছরে অন্তত ২৫ বার হাডুডু খেলায় অংশ নিয়েছি। হাডুডু খেলতে আমাদের কাছে খুব ভালো লাগে। রেফারি ও খেলা পরিচালনা কমিটির সদস্যরা আমার মাঠের লাইন বুঝিয়ে দেন। আমরা এ পর্যন্ত প্রায় ২০টি খেলায় জয়ী হয়ে পুরস্কার পেয়েছি।

আয়োজক কমিটির সভাপতি আবরার এইচকে ইউসুফ জাইয়ের তনু বলেন, ‘সাদাছড়ি দিবস উপলক্ষে খেলোয়াড় ও দর্শকদের একটু আনন্দ দিতেই এই খেলার আয়োজন করা হয়েছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা অনেকেই ভিক্ষাবৃদ্ধি করে। তাদের কর্মসংস্থান দেওয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি। বিজয় দিবসসহ বিভিন্ন দিবসে এ ধরনের খেলার আয়োজন করা হবে। এছাড়াও প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন সরাঞ্জাম দেওয়া হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘খেলায় সাদা ও নীল দল অংশ গ্রহণ করে নীল দল বিজয়ী হয়। তাদেরকে পুরস্কার হিসেবে নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে।’