ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ইউপি সদস্যকে টাকা দিয়েও সরকারি ঘর পাননি মোরশেদা

নীলফামারী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৩, ৪ নভেম্বর ২০২২   আপডেট: ১৬:২৪, ৪ নভেম্বর ২০২২
ইউপি সদস্যকে টাকা দিয়েও সরকারি ঘর পাননি মোরশেদা

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর কবির ময়নুল।

টাকা দিয়েও কপালে জোটেনি সরকারি ঘর। আবার মোটা অঙকের টাকা দিয়ে সেই ঘর পেয়েছেন অন্যরা। আশ্রয়ণ প্রকল্পের টাকা নিয়ে ঘর না দেওয়ার এমন অভিযোগ উঠেছে নীলফামারীর সৈয়দপুরে জাহাঙ্গীর কবির ময়নুল নামে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। 

এদিকে ইউপি সদস্য টাকা ফেরত না দেওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী মোরশেদার পরিবার। এ ঘটনায় তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর কবির ময়নুল সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউপি পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। 

ভুক্তভোগী মোরশেদা একই ইউনিয়নের সরদারপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, খোর্দ বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পেতে মোরশেদা ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর কবির ময়নুলের কাছে যান। তখন জাহাঙ্গীর তার কাছে ঘরের জন্য এক লাখ টাকা দাবি করেন। এতে ঘর পাওয়ার আশায় সুদে টাকা নিয়ে জাহাঙ্গীরকে ৩০ হাজার টাকা দেন মোরশেদা। এরপর প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ পেরিয়ে গেলেও কোনো ঘর বরাদ্দ না পাওয়ায় টাকা ফেরত চান মোরশেদা। কিন্তু তিন মাস থেকে টালবাহানা করেন জাহাঙ্গীর। ফলে ঘর ও টাকা কোনোটি না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ভূমিহীন পরিবারটি।

ভুক্তভোগীর স্বামী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘জাহাঙ্গীর মেম্বার এক লাখ টাকা চেয়েছিলেন। অগ্রিম ৩০ হাজার টাকা দিয়ে এখনো ঘর পাচ্ছি না। আবার টাকাও দিচ্ছেন না। মোবাইলে এ-সংক্রান্ত কথাবার্তার রেকর্ডিং আছে। অথচ টাকার বিনিময়ে অনেক সচ্ছল পরিবারকেও ঘর দেওয়া হয়েছে। এমনকি একই পরিবারের দুজনকেও ঘর দিয়েছেন মেম্বার।’

তিনি আরও বলেন, ‘খোদ্দ বোতলাগাড়ী পূর্ব হাজীপাড়ার নুর ইসলামের ছেলে মো. আবু সাঈদ, ছামছুল ইসলামের রবিউল ও সবুজ, মৃত বটু মামুদের ছেলে রেজাউল, আতাউলের ছেলে নয়ন ইসলাম এবং দালালীপাড়ার মৃত হারিংগা মামুদের ছেলে জাবেদ আলী (মাইয়ালু) ঘর পেয়েছেন টাকার বিনিময়ে। তদন্ত করলেই এর প্রমাণ মিলবে।’

মোরশেদা বেগম বলেন, ‘সুদের উপর টাকা দিয়ে ঘরও পেলাম না। টাকাও ফেরত পেলাম না। বৃহস্পতিবার রাতে চেয়ারম্যান ফোন করে বলে যে টাকা ফেরত পাবো। কিন্তু কবে ফেরত পাবো তা বলে নাই।’

ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর কবির ময়নুল বলেন, ‘ঘর দেওয়ার জন্য টাকা নেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়। মোরশেদা পোড়ারহাট বাজারের দোকান নিতে টাকা দিয়েছে। সে টাকা ফেরত দেওয়া হবে। আমার প্রতিপক্ষরা অহেতুক হয়রানী করতে এমন অপপ্রচার চালিয়েছে।’

উপজেলা নির্বাহী  নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল রায়হান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর শুধুমাত্র অসহায় ভূমিহীনদের জন্য বরাদ্দ। ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে তা অবশ্যই তদন্ত করা হবে। তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর সঙ্গে জড়িত কেউই পার পাবে না।’ 

সিথুন/ মাসুদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ