ঢাকা     রোববার   ০৫ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২২ ১৪৩১

রসিক নির্বাচনে জাপার একক, আ.লীগের হাফ ডজন প্রার্থীর দৌঁড়ঝাপ

আমিরুল ইসলাম, রংপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪০, ৯ নভেম্বর ২০২২   আপডেট: ১২:১১, ৯ নভেম্বর ২০২২
রসিক নির্বাচনে জাপার একক, আ.লীগের হাফ ডজন প্রার্থীর দৌঁড়ঝাপ

রসিক নির্বাচনে মেয়র পদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

তৃতীয় বারের মতো দরজায় কড়া নাড়ছে রংপুর সিটি কর্পোরেশন (রসিক) নির্বাচন। এরই মধ্যে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সিটি কর্পোরেশনটির ভোটের দিনক্ষণও ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আর এতেই আদা জল খেয়ে দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠে প্রচারণায় নেমেছেন প্রার্থীরা। দলীয় মনোনয়ন বোর্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এবং নিজেদের যোগ্য প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরতে পোষ্টার আর ব্যানারে ছেয়ে ফেলেছেন প্রার্থীরা পুরো নগর।

ভোটের মাঠে জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী থাকলেও সরকার দলীয় আওয়ামী লীগের মধ্যে মনোনয়নপত্র পেতে মরিয়া হয়ে ‍উঠেছেন হাফ ডজন নেতা। 

এদিকে ব্যানার ফেস্টুনের মাধ্যমে রসিক নির্বাচনে অংশগ্রহণের জানান দিলেও এখনো দলীয় প্রার্থী ঠিক করতে পারেনি বিএনপি। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে দলটির মনোনয়ন প্রত্যাশী তিন প্রার্থী। এই তিন প্রার্থী মেয়র পদের জন্য প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন।এছাড়াও জাসদ, বাসদ ও ইসলামী শাসনতন্ত্র দলের প্রার্থীসহ প্রায় একডজন প্রার্থী এককভাবে এখন রসিকের নির্বাচনি মাঠে সরগরম করছেন শোডাউন আর পথ সভা করে।

দলীয় নেতা কর্মীদের নিয়ে নির্বচনের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা।

গত সোমবার নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ তফসিল ঘোষণার পরপরেই জাপার একক প্রার্থী বর্তমান মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা কর্মী সমর্থকদের নিয়ে মোটরসাইকেল শোডাউন করেছেন নগরজুড়ে। দলটির অন্য প্রার্থী না থাকায় এবারেও বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছেন তিনি।

মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে জয়ী হয়ে আধুনিক নগর উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখার চেষ্টা করবো আমি।’

এদিকে পথসভার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নিজেকে যোগ্য হিসেবে তুলে ধরে মাঠে জোরেশোরে নেমে পরেছেন রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়ার রহমান সফি, সম্পাদক বাবু তুষার কান্তি মন্ডল। সভাপতি ও সম্পাদক ছাড়াও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আতাউজ্জামান বাবু, শ্রমিক নেতা এমএ মজিদসহ আরও দুইজন প্রার্থী নৌকার মনোনয়ন পেতে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচার প্রচারণা।

রংপুর নগর জুরে শো ডাউন ও প্রচারণায় ব্যস্ত বর্তমান মেয়র মোস্তাফিজার রহমান।

রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান বলেন, ‘এই নির্বাচন আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। রংপুরবাসীর জন্য চ্যালেঞ্জ। উত্তরাঞ্চলের নাভি এই সিটি করপোরেশনে সরকার দলীয় নৌকার মেয়র নির্বাচন করা এখন সময়ের দাবি। দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতার সঙ্গে নিজেকে নিবেদিত রাখতে আগামী নির্বাচনে দল মনোনয়ন দিলে নগর উন্নয়নে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার ইচ্ছা আমার।’

রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামুর ভাষ্যমতে নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ না হলে এবং কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত না আসলে তার দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। কিন্তু বিএনপির তিন প্রার্থী মেয়র নির্বাচনে ব্যানার ফেস্টুনের মাধ্যমে জানান দিচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে।

এদিকে বর্তমান মেয়রের আমলে সিটি করপোরেশনের প্রধান রাস্তাগুলো উন্নত হওয়ায় যেমন সন্তুষ্টি রয়েছে তেমনই যানজট দুর্ভোগের ইস্যুসহ শ্যামাসুন্দরী খাল খননের বরাদ্দের বিষয়গুলো উঠে আসবে এবারের নির্বাচনি প্রলাপে।

রংপুর নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও তিস্তা বাচাও নদী বাঁচাও আন্দোলন সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলরদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। সামনে নির্বাচন। পরিকল্পিত উন্নয়ন না পাওয়ায় নগরবাসী হিসেবে এটাই আমাদের বড় হতাশা।'

নির্বাচনি প্রচারণায় বিলবোর্ড ব্যবহার করেছেন বিএনপি নেতা।

প্রসঙ্গত, পৌরসভা থেকে ৩৩টি ওয়ার্ড নিয়ে রংপুর সিটি করপোরেশন গঠন হয় ২০১২ সালের ২৮ জুন। এরপর প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ওই বছরের ২০ ডিসেম্বর। এতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মরহুম সরফুদ্দিন আহমেদ ঝণ্টু প্রথম নগরপিতা হিসেবে নির্বাচিত হন।

২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর দ্বিতীয় নির্বাচনের সময় এই সিটি করপোরেশনের ভোটার ছিল ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৯৯৪ জন। এতে জাপা প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা মেয়র নির্বাচিত হন। 

২০৫ দশমিক ৭০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের রংপুর সিটি করপোরেশনের বর্তমানে জনসংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। আর ভোটার রয়েছেন চার লাখের বেশি।

আমিরুল/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ