ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

নতুন চালের গুঁড়ায় চলছে পিঠা উৎসব

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৫, ২৫ নভেম্বর ২০২২   আপডেট: ১৩:৪২, ২৫ নভেম্বর ২০২২
নতুন চালের গুঁড়ায় চলছে পিঠা উৎসব

কুয়াশা ভেদ করে যখন সূর্যের আলো প্রকৃতিতে আসে, তখন ধীরে ধীরে স্পষ্ট হতে শুরু করে দিগন্তবিস্তৃত আমনের ক্ষেত। সোনামাখা রোদে মাঠে মাঠে ঝলমলিয়ে ওঠে সোনালি ধান। সেই ধানের ঝিলিক যেন ছড়িয়ে পড়েছে হাওর, পাহাড় ও শিল্পের জেলা খ্যাত হবিগঞ্জে।

প্রকৃতিতে চলছে এখন অগ্রহায়ণ মাস। এখন জমি থেকে আমন ধান ঘরে তুলতে শুরু করেছেন হবিগঞ্জ জেলার কৃষকরা। সেই ধান থেকে পাওয়া চাল গুঁড়া করেই কৃষকদের বাড়িতে শুরু হয়ে গেছে পিঠা উৎসব। নানান ধরনের পিঠা তৈরি ও খাওয়ায় এখন ব্যস্ত কৃষক পরিবারগুলো।  

আরো পড়ুন:

জেলার চুনারুঘাট উপজেলার রামশ্রী গ্রামের সাদেকুর রহমান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘শীত পড়তে শুরু করেছে ইতোমধ্যে। আর এ সময় নতুন চালের তৈরি ভাপা ও চিতই পিঠার মজাই আলাদা।’ 

সাদেকুরের কথার সঙ্গে একমত হয়ে কৃষক সজল মিয়া, রমিজ মিয়া, সমুজ মিয়া, আশিক মিয়া, কাজল রায়ও একই কথা বললেন।

হবিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার ৮০ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়। পরিবেশ অনুকূলে থাকায় আমনের চাষ হয় ৮৮ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে।

জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, ইতোমধ্যে ধান কাটা পুরোদমে শুরু করেছেন চাষিরা। অনেক স্থানে ধান কাটা শেষ করে এনেছেন তারা। বর্তমানে হারভেস্টার মেশিনের মাধ্যমে অধিকাংশ কৃষকই জমি থেকে ধান সংগ্রহ করছেন। এতে দ্রুত জমির ধান সংগ্রহ করতে পারছেন তারা, আর টাকাও কম খরচ হচ্ছে।

কৃষকরা জানান, চলতি মৌসুমে ধানের দাম ভালো। প্রতি মণ ধান ১ হাজার থেকে শুরু করে ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি করতে পারছেন তারা।

চুনারুঘাটের লালচান্দের কৃষক এসএম সুমন মিয়া বলেন, ‘এক সময় শ্রমিকের জন্য অপেক্ষা করতে হতো। বর্তমানে হারভেস্টার মেশিনে ধান কাটা ও মাড়াই করা যাচ্ছে। ধানের বাজার দর ভালো। ধান বাড়িতে নেওয়ার পর তা থেকে চালের গুাঁড়া করেছেন আমার স্ত্রী। এখন সেই চালের পিঠা তৈরী হয়েছে। নতুন ধানের চালে পিঠা সবার পছন্দ।’ 

হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা আশেক পারভেজ বলেন, ‘এ মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমি থেকে প্রায় সোয়া ৩ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে। অনেক স্থানে ধান আরো বেশি উৎপাদন হয়েছে। কৃষকরা ধান কেটে বাড়ি নিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে গোলায় তুলছেন।’  

তিনি আরো বলেন, ‘শুধু ধান চাষ করলে হবে না। তার পাশাপাশি ভুট্টা, সরিষা, আলু, পাট, তিলসহ অন্যান্য ফসল চাষের প্রতিও গুরুত্ব দিতে হবে চাষিদের। একাধিক ফসল চাষে কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন তেমনি দেশ উপকৃত হবে।’

হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, ‘কৃষকদের ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়ার ব্যাপারে জেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিয়েছে বলেই ধানের দাম ভালো পাচ্ছেন তারা। এছাড়া কেউ যদি সিন্ডিকেট গড়তে চান, সে ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। কৃষক বাঁচলে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা থাকবে।’

মামুন চৌধুরী/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়