ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

মাগুরায় যুবদল নেতাকে কুপিয়ে জখম 

মাগুরা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১৩, ২ জানুয়ারি ২০২৩  
মাগুরায় যুবদল নেতাকে কুপিয়ে জখম 

মাগুরায় একদল অস্ত্রধারীর হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন যুবদলের এক নেতা। রোববার (১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শহরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনের সড়কে তার ওপর হামলা করা হয়।

আহত ওই যুবদল নেতার অভিযোগ, সম্প্রতি স্থানীয় সংসদ সদস্য–সংশ্লিষ্ট দুটি ইস্যুতে ফেসবুকে মন্তব্য করায় ও স্ট্যাটাস দেওয়ায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাঁর ওপর হামলা করেছেন। 

আহত ওই ব্যক্তি হলেন—মাগুরা জেলা যুবদলের সদস্য মো. মারুফ হোসেন (৪২)। তিনি আগামী সম্মেলনে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। এর আগে মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।

আহত ব্যক্তি ও বিএনপির নেতকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ফটকের পাশে ওই যুবদল নেতার দোকান আছে। সেখানে এক আইনজীবীর সঙ্গে কাজ শেষে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে দোকান বন্ধ করে দুজন বের হচ্ছিলেন। এ সময় তাদের কাছে খবর আসে, পাশের গলিতে একদল অস্ত্রধারী যুবক অবস্থান নিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে তারা দুজন দ্রুত বের হতে গেলে অস্ত্রধারীরা তাদের ধাওয়া করেন। সফিক নামের ওই আইনজীবী কেশব মোড়ের দিকে পালিয়ে যান। কিন্তু যুবদল নেতা মারুফকে ধরে ধারালো দেশি অস্ত্র চাপাতি, রামদা ও ছ্যান দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যান হামলাকারী ব্যক্তিরা। এরপর আহত যুবদল নেতাকে মাগুরা সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হামলার বিষয়ে আজ সোমবার (২ জানুয়ারি) সকালে মোবাইল ফোনে যুবদল নেতা মারুফ হোসেন বলেন, ‘গত ১৪ ডিসেম্বর স্থানীয় এমপি বিএনপির নেতা-কর্মীদের দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে আমার ফেসবুক ওয়ালে স্ট্যাটাস দেই। এই ঘটনার জেরে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা হামলা করেছেন। তবে আমি যা লিখেছি, তাতে নির্দিষ্ট কোনো এমপির নাম নেই, জেলার নামেরও উল্লেখ নেই।’

চিকিৎসক ও আহত ব্যক্তির স্বজনেরা বলেন, মারুফের মাথায় ও দুই হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাত আছে। এর মধ্যে মাথার একটি কোপ গুরুতর। রাতেই তাকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সম্প্রতি মাগুরা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলতে চাই, মাগুরার যাদের পল্টনের সমাবেশ বা পুরান ঢাকার সমাবেশে দেখা গেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে কিন্তু আমরা ব্যবস্থা নেব। এই মাগুরায় আমরা কোনো সন্ত্রাসী, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে এক ইঞ্চি জায়গা দেব না।’

আজ সকালে এক প্রশ্নের জবাবে যুবদল নেতা মারুফ হোসেন দাবি করেন, ‘আগেই আমাদের জানানো হয়েছিল, আটজনকে মারার জন্য নাকি তালিকা করা হয়েছে। তার মধ্যে আমি একজন। যারা হামলা করেছেন, তাঁদের সুনির্দিষ্ট পরিচয় এখনই বলতে পারছি না, তবে সবাই ছাত্রলীগ ও যুবলীগের রাজনীতি করেন, এটা নিশ্চিত।’

অভিযোগের বিষয়ে মাগুরা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মো. ফজলুর রহমান বলেন, ‘এমন কেউ মার খেয়েছে, এটাই জানি না। আমরা গতকাল (শনিবার) জেলা শ্রমিক লীগের সম্মেলন নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। এসব কিছু আমাদের জানা নেই। যুবলীগের নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না।’

মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই করে বের করার চেষ্টা করছি, হামলায় কারা জড়িত। খবর পেয়ে আমি হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কারা হামলা করেছেন, তিনি তাৎক্ষণিকভাবে চিনতে পারেননি। সুস্থ হলে কথা বলে বিষয়টা পরিষ্কার হওয়া যাবে।’ 

শাহীন/মাগুরা

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়