ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

সমতলে বাড়ছে পাহাড়ি কলার চাহিদা, লাভবান হচ্ছেন চাষি

এ কে আজাদ, খাগড়াছড়ি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৮, ১৭ জানুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ১৩:০১, ১৭ জানুয়ারি ২০২৩
সমতলে বাড়ছে পাহাড়ি কলার চাহিদা, লাভবান হচ্ছেন চাষি

পাহাড়ে আবাদকৃত কলার চাহিদা বেড়েছে সমতলে। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার টিলাভূমি ও বাড়ির আশপাশে উৎপাদিত কলা এখন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রতিনিয়ত সমতলের বাজারে বিক্রি হচ্ছে। চাহিদা বেশি হওয়ায় সারাদেশে পাহাড়ি কলা বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

খেতে সুস্বাদু হওয়ায় বিভিন্ন জেলায় খাগড়াছড়ির কলার চাহিদা অনেক বেশি। পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রাম থেকে পাহাড়ি টিলা পথে কলা নিয়ে আসা হয় খাগড়াছড়ি কলা বাজারে। সেখান থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা কলা কিনে পণ্যবাহী ট্রাকের মাধ্যমে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও ঢাকাসহ সারাদেশে নিয়ে যান বিক্রির জন্য।

খাগড়াছড়িতে দুই জাতের কলা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। একটি বাংলা কলা ও অন্যটি চাপা কলা। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এটি চম্পা কলা নামেই বেশি পরিচিত। উঁচু পাহাড়ের মাটিতে জন্মায় বলে এগুলোকে পাহাড়ি কলাও বলা হয়।

পুষ্টিগুণ বেশি হওয়ায় চাপা কলার চেয়ে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হয় বাংলা কলা। যার কারণে এই কলার চাষ বেশি করে থাকেন পাহাড়ের কৃষকরা। সারাবছর এসব কলার ফলন পাওয়া গেলেও আগস্ট থেকে অক্টোবর মাসে ফলন হয় সবচেয়ে বেশি। এ সময় পাওয়া কলাগুলো আকারেও অনেক বড় হয়। বাজারে দামও বেশি পাওয়া যায়।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,  পাহাড় থেকে প্রচুর পরিমাণ কলা সমতলের বাজারে যাচ্ছে। এছাড়াও প্রতি বুধবার বাজারের দিন খাগড়াছড়ি থেকে ছোট-বড় ১৫/২০ গাড়িতে করে কলা সারা দেশে পাঠানো হয়।

চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ির কলা বাজারে আসা ব্যবসায়ী সোলায়ন হক রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘শহরের বাজারগুলোতে পাহাড়ি অঞ্চলের কলার চাহিদা অনেক বেশি। সমতল এলাকার কলা আর পাহাড়ের কলার গুণগত মানে অনেক পার্থক্য। তাই এখানকার কলার দামও বেশি।খাগড়াছড়ি থেকে কলা নিয়ে সমতলের বাজারে বসে থাকতে হয় না। প্রতি বছর কলার দাম বাড়ে। এ বছরও বেড়েছে। প্রতি ছড়া (কমপক্ষে ১০০ পিস) কলা মানভেদে ১০০ থেকে ১ হাজার টাকায় কিনে থাকি। কিছু কিছু এলাকার কলার ছড়া এত বড় হয়, সেগুলো ২ থেকে ৩ হাজার টাকায় কিনতে হয়।’

খাগড়াছড়ি কলা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামাল বলেন, ‘এই বাজারে বাইরে থেকে অনেক ব্যবসায়ী আসেন। প্রতি বাজারে ব্যবসায়ী এবং কৃষকদের মধ্যে প্রায় ৫০ লাখ টাকা লেনদেন হয়ে থাকে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘বাজারে কলা এনে কখনোই অপেক্ষা করতে হয় না কৃষকদের। খুব সহজে উপযুক্ত দামে কলা বিক্রি করে বাড়ি চলে যেতে পারেন তারা। ফলে দ্রুত সময়ে বেচাকেনা হওয়ায় কৃষক এবং ব্যবসায়ী দুজনই লাভবান হন।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কিশোর কুমার মজুমদার বলনে, ‘খাগড়াছড়ি জেলায় বেশিরভাগ ভূমিই পাহাড়ি। এই পাহাড়ি জমিতে  চাপা ও বাংলা কলার ভালো ফলন হয়। এসব কলা নিজে থেকেই বেড়ে ওঠে পাহাড়ের মাটিতে । তেমন পরিচর্যারও প্রয়োজন হয় না। শুধু কলা চারার আশপাশে জঙ্গল পরিষ্কার করলেই চলে। এটি অনেক লাভজনক ফল।’ 

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়