ঢাকা     রোববার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

সৌদি আরবে বাস দুর্ঘটনায় নিখোঁজ রুহুলের বাড়িতে মাতম

মাদারীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০৬, ৩১ মার্চ ২০২৩   আপডেট: ১৩:১১, ৩১ মার্চ ২০২৩
সৌদি আরবে বাস দুর্ঘটনায় নিখোঁজ রুহুলের বাড়িতে মাতম

সৌদি আরবের একটি ভাতের হোটেলে কাজ করতেন রুহুল আমিন রনি

সৌদি আরবে বাস দুর্ঘটনায় একাধিক বাংলাদেশী নিহত হয়েছেন। এই দুর্ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন মাদারীপুরে যুবক রুহুল আমিন রনি (৩০)। বিদেশের মাটিতে ভাগ্য ফিরাতে যাওয়া এই যুবকের সন্ধান না পাওয়ায় পরিবারের ধারণা রুহুল আর বেঁচে নেই। এতে পরিবারের চলছে শোকের মাতম।

গত সোমবার সকালে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে  কথা বলেছিলেন রুহুল। এরপর থেকে তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি পরিবারের সদস্যরা। 

আরো পড়ুন:

নিখোঁজ রুহুলের বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলার দিয়াপাড়া গ্রামে। তিনি একই গ্রামের মৃত ইসাহাক মাতুব্বরের ছেলে।

রুহুলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাড়িতে থাকাকালে অটোরিকশা চালিয়ে সংসারের ব্যায় নির্বাহ করতেন তিনি। অভাব অনটনের সংসারে সচ্ছলতা ফেরানোর জন্য গত বছরের জুলাই মাসের ২ তারিখে সাড়ে চার লাখ টাকা ঋণ করে রুহুল সৌদি আরবে যান। সেখানে আবা জেলার খামিজ শহরের একটি ভাতের হোটেলে ২৮ হাজার টাকা বেতনে কাজ করতেন তিনি। গত সোমবার ওমরাহ পালনের জন্য বাসে করে দেশটির মক্কা নগরীর উদ্দেশে রওনা হন তিন। সোমবার সৌদির স্থানীয় সময় বিকেলে ইয়েমেন সীমান্তবর্তী আসির প্রদেশের আকাবা শার এলাকায় বাসটি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে ওই বাসের ১৮ বাংলাদেশি যাত্রী নিহত হন। এরপর থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন তিনি।

দুই সন্তানকে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন রুহুলের স্ত্রী আসমা বেগম

বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সকালে রুহুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির উঠান ভর্তি মানুষ। চলছে স্বজনদের আহাজারি। মা রাবেয়া বেগম আর বোন রুনা আক্তার কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। প্রতিবেশীরা অনেকেই ছুটে এসেছেন রুহুলের পরিবারকে সান্তনা দিতে।

বিলাপ করে রুহুলের মা রাবেয়া বেগম বলেন, ‘আমার বাজান অনেক ভালো ছিলো। কখনো নিজের কষ্টর কথা আমাগো কইতো না। আমাগো ৫ টা মানুষের ভরসা ছিলো সে। আইজ আল্লাহ আমার বাজানরে কই রাখছে জানি না। তোমরা আমার রুহুলকে খোঁজে আইন্না দাও। ওরে আমি দেখতে চাই।’

উঠোনের এক কোনো দুই শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে নিস্তব্দ হয়ে বসেছিলেন রুহুলের স্ত্রী আসমা বেগম। স্বামীর কথা জিজ্ঞেস করতেই ডুকরে কেঁদে ওঠেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী কাজ থেকে ছুটি নিয়ে ওমরাহ করতে গিয়েছিলেন। তারপর থেকে তিনি নিখোঁজ। আমরা জানি না উনি বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন। দুইটা ছোট ছোট ছেলেমেয়ে, শাশুড়ি, ননদ লইয়া কই যামু আমি। সরকারের কাছে আমাদের আবেদন আমার স্বামীর যদি লাশ পাওয়া যায় তারা যেন দ্রুত সেটি খুঁজে বের করে আমাদের ফেরত দেন।’ 

ভাইয়ের জন্য বোন রুনা আক্তারের আর্তনাদ

মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাইনউদ্দিন বলেন, ‘আমরা এখনো নিশ্চিত নই উনি (রুহুল) জীবিত আছেন নাকি মারা গেছেন। তার বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তবে তার পরিবারের ধারণা, তিনি মারা গেছেন। সঠিক তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পরে বাকি কার্যক্রম শুরু করা হবে।’

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বেলাল/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়