ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

থমকে আছে ভবনের কাজ, শ্রেণিকক্ষ সংকটে ব্যাহত পাঠদান 

পঞ্চগড় প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৭, ৩ জুন ২০২৩   আপডেট: ১৫:২৩, ৩ জুন ২০২৩
থমকে আছে ভবনের কাজ, শ্রেণিকক্ষ সংকটে ব্যাহত পাঠদান 

বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের সংকট লাঘবে ২০২০ সালে দ্বিতল ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কিন্তু তিন বছরেও ভবনের কাজ শেষ না হওয়ায় চরম ভোগান্তিসহ শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে বারান্দায়। জায়গার অভাবে শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি করে বসিয়েও পাঠদান করতে হচ্ছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান।  

পাশাপাশি নানান সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অবকাঠামোগত এই সমস্যার কারণে বিদ্যালয়টিতে দিন দিন কমছে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও।

এটি পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের বানিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র।

জানা গেছে, ১৯৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত বানিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে দুই শতাধিক শিশু শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে। 

তথ্য অনুযায়ী, স্কুলে শ্রেণিকক্ষ না থাকায় ২০২০ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের তত্ত্বাবধানে দ্বিতল ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এক কোটি ১৭ লাখ টাকা টাকা বরাদ্দে এই ভবনের নির্মাণ কাজ ২০২২ সালের জুনে শেষ করার কথা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে ভবনটির কাজ শেষ হয়নি এখনো।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে বর্তমানে তিনটি কক্ষ রয়েছে। এর একটিতে অফিস কক্ষ এবং অপর দুইটিতে সমন্বয় করে বসেন শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৬ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হলে আগের তিন কক্ষবিশিষ্ট পুরাতন ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়। তারপর থেকেই কক্ষসংকট চলছে। এখন সকাল শিফটে দুই কক্ষের একটিতে প্রথম শ্রণি এবং অপরটিতে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বসানো হয়। আর বারান্দায় বসানো শিশু শ্রেণিকে। একইভাবে বিকেল শিফটে তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণিকে কক্ষে বসানো হলেও চতুর্থ শ্রেণির পাঠদান হয় বারান্দায়। বারান্দায় পাঠদানে শিক্ষার্থীদের অমনযোগসহ শিক্ষকরাও বিব্রতকর পরিস্থিতি পড়েন।

শিক্ষার্থীরা জানায়, বারান্দায় বসে পাঠদান তাদের জন্য কষ্টকর। লিখতে গেলে পিঠ ব্যথা করে। এছাড়া খোলা বারান্দায় ক্লাস করতে গিয়ে রোদ সরাসরি গায়ে লাগে। আবার ফ্যানও নাই, তাই গরমে অনেক কষ্ট হয়। বৃষ্টি আসলে ক্লাস বন্ধ করে অফিসে গাদাগাদি করে বসে থাকতে হয়। 

বিদ্যালয়টির সহকারি শিক্ষক সানজিদা প্রধান বলেন, ভবনের কাজ ধীরগতির কারণে দীর্ঘদিন ধরেই শ্রেণিকক্ষ সংকটে ভূগছি আমরা। এ অবস্থায় বারান্দায় করাতে হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীদের মনযোগ ঠিক থাকেনা, আমরাও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে যাই। এছাড়া শীতকাল এবং বর্ষাতে খুবই সমস্যা হয়। এ কারণে অনেক অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের অন্যত্র ভর্তি করাচ্ছেন।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মর্জিনা পারভীন বলেন, ২০২০ সালে নতুন ভবনের কাজ শুরু হয়। এরপর ২০২২ সালের জুনে কোন কারণ ছাড়াই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বারবার যোগাযোগ করেও ভবনের কাজ শুরু করাতে পারতেছিনা। ভবনটির কাজ দ্রুত শেষ হলে আমাদের সংকট কেটে যেতো।

বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, ভবনের কাজ থমকে থাকায় শ্রেণিকক্ষের সংকট নিরসন হচ্ছে না। ফলে বিদ্যালয়ে মানসম্পন্ন পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এতে অভিভাবকরাও ক্ষুব্ধ। অনেকেই তাদের সন্তানদের অন্যখানে ভর্তি করাচ্ছেন। ভবনের কাজ শেষ করতে আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও কোন সাড়া পাচ্ছি না। 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) দেবীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী শাহরিয়ার ইসলাম শাকিল বলেন, ভবনটির কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আবু নাঈম/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়