রংপুরে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশ প্রশাসনের দালাল বিরোধী অভিযানে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দালাল হিসেবে ধরার অভিযোগে রংপুরে কর্মরত ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে।

সোমবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে রংপুরের ফার্মাসিউটিক্যালস্ রিপ্রেজেন্টেটিভ অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে ওই বিক্ষোভ করা হয়। এ সময় ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা— ‘প্রকৃত দালাল ধরুন, আমরা দালাল নই। আমরা উচ্চ শিক্ষিত, আমরা ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করি’ বলে স্লোগান দেন।

বিক্ষোভের সময় ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা বলেন, ‘আমরাও চাই, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দালালমুক্ত হোক। প্রশাসন বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করবে সেটিকেও আমরা সাধুবাদ জানাই। কিন্তু সেই দালালমুক্ত অভিযানে প্রকৃত দালালদের না ধরে, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের কেন হয়রানি করবে? কেন দালাল বলে আখ্যায়িত করবে? এটা আমরা মেনে নিতে পারি না।’

গত ২৪ আগস্ট চিকিৎসা সেবা অক্ষুন্ন রাখতে এবং দালালমুক্ত করতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে জেলা প্রশাসন ও রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। এ সময় চার জন দালালকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেই অভিযানে ওষুধ কোম্পানির এক প্রতিনিধিকে জেল দেওয়া হয়েছে।

কোম্পানির প্রতিনিধিরা বলেন, ‘এ ঘটনায় আমরা মর্মাহত, আমরা অপমাণিত হয়েছি।’ 

বিক্ষোভে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভ্রামমাণ আদালত পরিচালনার সময় দালাল আখ্যায়িত করে হেয় প্রতিপন্ন করার সুষ্ঠু সমাধান ও সকল প্রকার অবৈধ প্রেসক্রিপশন সার্ভে বন্ধসহ পাঁচ দফা দাবির কথা জানিয়ে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা।

এ সময় বাংলাদেশ ফার্মাসিউটিক্যালস্ রিপ্রেজেন্টেটিভ অ্যাসোসিয়েশনের (ফারিয়া) প্রধান উপদেষ্টা বেলাল আহমেদ বলেন, ‘আমাদের কাজের ধরণটাই হলো হাসপাতালে, ক্লিনিকে ও ডাক্তারের কাছে যাওয়া। অথচ আমাদের দালাল হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রচার করা, এটা দুঃখজনক। আমাদের দালাল বলে আখ্যায়িত করে, মিডিয়ায় প্রচার করা হয়েছে। আমাদের মান-সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা আজ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ফুল নিয়ে এসেছি। রংপুর মেডিকেলে দালালমুক্ত করতে অভিযান পরিচালনার জন্য আমরা ফুলেল শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি। যেন আগামীতে এরকম বিভ্রান্তি কর ঘটনা না ঘটে।’ 

জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক এ ডব্লিউ রায়হান শাহ বলেন, ‘আইনের উর্ধ্বে আমরা কেউ নই। প্রধানমন্ত্রী সরকারি-বেসরকারি সকল সেবা প্রতিষ্ঠান দালালমুক্ত করে নির্বিঘ্নে সেবা প্রদানের পরিবেশ তৈরিতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা নির্দেশে কাজ করছি। তবে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের আবেদন আমরা আইনগত দিক থেকে বুঝব।’ 

বিক্ষোভে ফারিয়ার রংপুর মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আশিকুর রহমান আশিক ও সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলীসহ অন্যান্য নেতা ও সদস্যরা অংশ নেন। বিক্ষোভ শেষে দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি জেলা প্রশাসক বরাবর পেশ করা হয়।