সেভেনআপে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে ছেলেকে হত্যা, স্বীকারোক্তি দিলেন বাবা
রাজবাড়ী সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বাবা মো. খলিলুর রহমান(৬৯) বলেছেন, তিনি নিজেই মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলেকে সেভেনআপে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করে হত্যা করেছেন।
রাজবাড়ীর কালুখালীতে মানসিক প্রতিবন্ধী মো. রুবেল মন্ডল ওরফে মোয়া (২৬) হত্যার ২২ দিন পর রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) আদালতে এই তথ্য নিজেই জানালেন বাবা। এর আগে শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত ১০ টায় ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার ডেন্ডাবর এলাকা থেকে খলিলুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রুবেল হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনসহ গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রাণবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস।
গ্রেপ্তারকৃত মো. খলিলুর রহমান কালুখালী উপজেলা বোয়ালিয়া গ্রামের মৃত তাছের মন্ডলের ছেলে। তিনি রুবেলের জন্মদাতা বাবা।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) ভোর ৬ টায় উপজেলার মোহনপুর রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক সংলগ্ন কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রোডের দক্ষিণ পাশে জনৈক ধলু মন্ডলের ধান ক্ষেত থেকে রুবেল মন্ডল মোয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।এ ঘটনায় রুবেলের মামা মো. দেলোয়ার হোসেন দিনু বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে কালুখালী থানায় মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ জানায়, খলিলুর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভে জন্ম রুবেলের। তবে রুবেলকে সন্তান হিসেবে মেনে নেননি খলিলুর রহমান।এরপর তিনি দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেন। দ্বিতীয় স্ত্রী আরেকটি বিয়ে করেন।এরপর থেকেই রুবেল তার নানির কাছে বড় হতে থাকে। ১৫ বছর পর্যন্ত সুস্থ থাকলেও পরে মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে যায় রুবেল। এরপর রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতো রুবেল।গত ২৩ আগস্ট বুধবার বিকেল থেকে খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলো না রুবেলের।পরদিন ভোরে কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকার ধানক্ষেতে তার মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে পুলিশ নিবিড়ভাবে তদন্ত শুরু করে। তদন্তে বের হয়ে আসে হত্যাকাণ্ডের সাথে রুবেলের বাবা খলিলুর জড়িত।পরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কালুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) প্রাণবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আসামি খলিলুর রহমান তার ছেলে রুবেলকে প্রথমে সেভেনআপে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করেন। তারপর তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ধানক্ষেতের মধ্যে ফেলে রেখে যান।
ওসি আরও বলেন, আসামি খলিলুর রহমানকে আদালতে পাঠানো হলে তিনি হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
রবিউল আউয়াল/টিপু
আরো পড়ুন