হামলা-মামলায় উত্তপ্ত পাবনা-১
পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
পাবনা-১ আসনের নির্বাচন ঘিরে ‘নৌকা’ ও ‘ট্রাক’ প্রতীক প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, হামলা, মামলা ও নাশকতার ঘটনা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হচ্ছে সাঁথিয়া ও বেড়া উপজেলা ঘিরে। সরকার দলীয় প্রার্থী ও জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদের অনুসারীদের মধ্যে চলছে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা।
আরও পড়ুন: ‘নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে কাজ করছেন না’
এই আসনের ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাডভোকটে শামসুল হক টুকুর প্রধান নির্বাচনি এজেন্ট তারই ছেলে ও বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আসিফ শামস রঞ্জন। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদের প্রধান এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন শামসুল হক টুকুর আপন ভাই বেড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল বাতেন। মূলত চাচা-ভাতিজাই নির্বাচনি মাঠ গরম করে রেখেছেন। উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, তাদের মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও গ্রেপ্তার করছে না পুলিশ।
‘নৌকা’ প্রতীকের প্রধান নির্বাচনি এজেন্ট আসিফ শামস রঞ্জন অভিযোগ করে বলেন, ‘নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা শুরু থেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদের সমর্থকরা নৌকার প্রচার-প্রচারণা, নির্বাচনি গণসংযোগ, পথ সমাবেশ ও নির্বাচনি মিছিলে নানাভাবে হামলা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, গাড়ি ভাঙচুর ও ধাওয়া দিয়ে সংঘর্ষে জড়াচ্ছে। আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে তারা মারধর করেছে। আমাদের প্রচার যন্ত্র ভাঙচুর ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে।’
আরও পড়ুন: নৌকার সমর্থকদের হামলায় জানে বেঁচে আসছি: স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ
তিনি আরও বলেন, ‘গত শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) নির্বাচনি শোডাউনের নামে তারা মিছিল থেকে ইটপাটকেল ছুঁড়েছে। সাঁথিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসে ঢুকে ভাঙচুর করেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিও তারা ভাঙচুর করে। পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলীয় অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও নেতাকর্মীদের মারধরের অভিযোগে পৃথক ২টি মামলা করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছে না। মামলার আসামিরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর সভা সমাবেশ ও মিছিলে উপস্থিত থাকলেও তাদের না জানা কারণে পুলিশ গ্রেপ্তার করছে না।’
আরও পড়ুন: আ.লীগের কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘আমি জেনেছি রোববার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ সংবাদ সম্মেলন করেছেন। একইমঞ্চে মামলার অন্যতম আসামি বেড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল বাতেন, সাঁথিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহামুদ দেলোয়ার, সাঁথিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র মিরাজুল ইসলাম প্রামানিক, স্থানীয় শিল্পপতি মতিউর রহমান দুলাল, সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমানসহ অন্য আসামিরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। কিভাবে মামলার আসামিরা পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন করে সেটা আমার বুঝে আসে না। বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এই সব আসামিরা প্রকাশ্য বিচরণ করলেও পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: সাঁথিয়ায় সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ মামলা, গ্রেপ্তার ৩
এদিকে আজ দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও তার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট আব্দুল বাতন অভিযোগ করেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট অনুষ্ঠানের অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে নৌকা প্রার্থী শামসুল হক টুকু ও তার ছেলে রঞ্জন। তারা আমাদের নির্বাচনি কার্যক্রমে বাধা দিচ্ছেন। নেতাকর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে মিথ্যা মামলা। আমরা শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশ চাই। সেই সঙ্গে আমাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
তারা বলেন, আমাদের মিছিলে হামলা ও মারধরের অভিযোগে সাঁথিয়া পৌরসভার মেয়র মাহবুবুল আলম বাচ্চুসহ ১৪ জনের নামে মামলা হয়েছে। প্রকাশ্যে পৌর মেয়র বাচ্চু নৌকা প্রতীকের কার্যক্রম চালালেও পুলিশ তাকেসহ অন্য আসামিদের ধরছে না। আসলে তারা এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে।
আরও পড়ুন: সাঁথিয়ায় নৌকা ও ট্রাক প্রতীকের সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ১০
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে ২টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ১টি মামলা থানায় রেকর্ড করা হয়েছে। পৃথক তিনটি মামলায় তিন জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। শুক্রবারের ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করলেও নাশকতা ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
আসামিরা প্রকাশ্য ঘুরলেও তাদের কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না এমন প্রশ্নের উত্তরে ওসি আনোয়ার বলেন, ‘আসামি ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে। কিছু আসামি বেড়া থানার আওতাভুক্ত হওয়ায় তাদের গ্রেপ্তারে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘সাঁথিয়া থানার রিক্যুজিশন পেলে আসামি ধরতে সহায়তা করা হবে।’
শাহীন/মাসুদ
- ৯ মাস আগে চক্রান্তকারীদের সুরে কথা বলছেন ওয়ার্কার্স পার্টির বাদশা
- ৯ মাস আগে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় পরাজয় রাঙ্গার
- ৯ মাস আগে মুন্সীগঞ্জে প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর, গরু-টাকা লুট
- ৯ মাস আগে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে : লতিফ সিদ্দিকী
- ৯ মাস আগে বরিশালে পুলিশি বাধায় পন্ড বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মিছিল
- ৯ মাস আগে নৌকার সমর্থকদের মারধর: বাকেরগঞ্জ স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি গ্রেপ্তার
- ৯ মাস আগে পঞ্চগড়ে যুবলীগ নেতাকে মারধর: গ্রেপ্তার ৩
- ৯ মাস আগে স্থগিত আসনে নৌকা প্রতীকের নিলুফার জয়ী
- ৯ মাস আগে স্বতন্ত্র প্রার্থী ওলিও’র বিরুদ্ধে শত কোটি টাকার মানহানি মামলা
- ৯ মাস আগে গৌরীপুরে স্থগিত কেন্দ্রে ভোট শনিবার
- ৯ মাস আগে ত্যাগীদের অবমূল্যায়ন আর চা-শ্রমিকদের ভোটই ব্যবধান গড়েছে
- ৯ মাস আগে নেতাকর্মীদের বিভক্তি-দ্বন্দ্বে হেরেছেন মমতাজ
- ৯ মাস আগে যে কারণে হারলেন স্বপন ভট্টাচার্য
- ৯ মাস আগে মহিববুর হলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী
- ৯ মাস আগে ভোট পুনঃগণনার দাবি করলেন নৌকার প্রার্থী শহিদুল ইসলাম