উখিয়া সীমান্তে রাতভর গোলাগুলি
আশ্রয় নেওয়া বিজিপির ২ সদস্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক
তারেকুর রহমান, কক্সবাজার || রাইজিংবিডি.কম
কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্তে মিয়ানমার অভ্যন্তরের গোলাগুলি ও বিকট বিস্ফোরণের শব্দে আতঙ্কে রয়েছে মানুষ। এদিকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপির ২ সদস্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। তারা কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সারাদিনই গোলাগুলি চলেছে। এইদিন সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত ২টা পর্যন্ত উখিয়ার পালংখালী ইউপির ধামনখালী সীমান্তের ওপারে ঢেঁকিবুনিয়া এলাকায় ব্যাপক গোলাগুলি ও বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। তবে আজ (সোমবার) সকাল থেকে গোলগুলির কোনো শব্দ শোনা যায়নি।
পালংখালীর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সীমান্তে তার এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে। সকালে নতুন করে গোলাগুলির শব্দ শোনা না গেলেও মানুষের মাঝে আতঙ্ক কাটেনি।
থাইংখালী এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, মিয়ানমারের ভেতরে চলা সংঘাতের প্রভাব পড়ছে আমাদের সীমান্তে। তাদের গোলাগুলির কারণে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি আমরা। তবে সোমবার সকাল থেকে এখনো পর্যন্ত গুলির শব্দ শোনা যায়নি।
তবে সোমবার সকালে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তে ২/৩ টির গুলির শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম।
এদিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অভ্যন্তরে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সাথে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর দিনভর সংঘাতের জেরে দেশটির ৯৫ জন সীমান্তরক্ষী পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
রোববার রাত ১২ টায় এবং সোমবার সকাল পৌনে ৮ টায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি ) এর সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে রাতে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া বিজিপির সদস্য সংখ্যা জানানো হয়েছিল ৬৮ জন। সোমবার সকালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৫ জনে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিজিপির ৬৮ জন সদস্যের মধ্যে ১৫ জনের বেশি সংঘর্ষে আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশংকাজনক। তারা কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এছাড়া রোববার থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত নতুন করে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ২৭ জনের কতজন আহত তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
শরিফুল ইসলাম বলেন, রোববার সকাল থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত বিজিপির ৯৫ জন সদস্য অস্ত্রসহ তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। পরে তারা বিজিবির কাছে আশ্রয় চাইলে হেফাজতে নেয়। বিজিবি তাদেরকে নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছে। বিজিপির আহত সদস্যের চিকিৎসার ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আশিকুর রহমান বলেন, মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির দুই সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের অবস্থা আশংকাজনক।
বিজিপির চিকিৎসাধীন ওই দুই সদস্য হলেন, জা নি মং (৩০) ও নিম হ্লাইন কাইন (২২)। আহতরা রাখাইন রাজ্যের বুচিডং, টাংগো এবং ম্রাউ এলাকার বাসিন্দা। তাদের মধ্যে দুজনের বয়স ২৪, দুজনের ২৩, একজনের ২০ এবং বাকি একজনের ২২ বছর বলে জানা গেছে।
/টিপু/