ঢাকা     সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

বগুড়ার শেরপুরে বেগুনের কেজি ১ টাকা

বগুড়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:১২, ১৬ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ১৯:১৪, ১৬ মার্চ ২০২৪
বগুড়ার শেরপুরে বেগুনের কেজি ১ টাকা

বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় এবার বেগুনের ভালো ফলন হয়েছে।

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার পাইকা‌রি বাজারে ১ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে বেগুন। এরপরও ক্রেতা না পে‌য়ে বাজারে বেগুন রেখে চলে যান তারিকুল ইসলাম নামের এক কৃষক। শনিবার (১৬ মার্চ) সকালে উপজেলার চান্দাইকোনা হাটে ঘটনাটি ঘটে। কৃষক তারিকুল সুঘাট ইউনিয়নের বিনোদপুর গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে।

উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারি বাজাররে ১ থেকে ৩ টাকা কেজি দরে বেগুন বিক্রি হয়েছে। মির্জাপুর, রেজিষ্ট্রি অফিস, শেরুয়া বটতলা, বিকেল বাজার, সকাল বাজার, দশমাইল বাজারে খুচরা ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে বেগুন বিক্রি করা হচ্ছে। কৃষক ১ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলেও ভোক্তাদের বেগুন কিনতে হয়েছে প্রায় ১০ গুণ বেশি দাম দিয়ে। 

কৃষক তারিকুল ইসলাম বলেন, আমি এই প্রথম ৫ মণ বেগুন তুলেছি। বেগুনগুলো ৬০ টাকা খরচ করে চান্দাইকোনা পাইকারি বাজারে নিয়ে গিয়েছি। সেখানে ১ টাকা কেজি দরে এই সবজিটি  বিক্রি হচ্ছিল। তখন আমি বিক্রি করিনি। এক ঘণ্টা পর দেখি বেগুন কেনার মতো আর কোনো ক্রেতা নেই। তখন বাজারেই বেগুন রেখে চলে আসি। কারণ খাজনা বা জায়গা পরিষ্কার করার জন্য বেগুন ফেরত নিয়ে আসতে হবে। আমি কষ্ট করে বেগুন চাষ করে বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে পারছি না, এর চেয়ে কষ্ট একজন কৃষকের আর কি হতে পারে।

অপর কৃষক আলম বলেন, ক্ষেতের বেগুন নিয়ে বাজারে গিয়েছিলাম। প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা দরে। এর ফলে বাজারে বেগুন তোলার খরচ ও আড়তের খরচও উঠছে না। দাম না থাকায় কৃষকের খেতেই বেগুন পঁচে যাবে। আমরা বেগুন চাষ করে দিশেহারা হয়ে পড়েছি। সরকারি সহযোগিতা করে হলেও কৃষকরা যেন তাদের ন্যায্য দাম পায় সে বিষয়টি প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে। কথায় আছে, কৃষক বাঁচলে বাঁচবে দেশে।

কৃষক ফুরকান আলী বলেন, বেগুনের ফলন ভালো হয়েছে। একজন শ্রমিক নিলে ৪০০-৫০০ টাকা গুণতে হয়। এই টাকা মজুরি দিয়ে বেগুন খেত থেকে তুলে বাজারে এনে যে দাম মিলছে, তাতে কোনো খরচই উঠছে না। আমাদের মতো চাষিদের করুণ দশা হয়ে পড়েছে। এমন যদি হয়, তাহেল কৃষকরা কৃষি আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।

পাইকারি আড়তের আড়তদারা জানান, বেগুনের ব্যাপক আমদানির কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

শেরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা আক্তার বলেন, এই উপজেলায় এবার ২২০ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়েছে। বেগুনের ফলন এবার খুবই ভালো হয়েছে। প্রতি বছর রমজানে বেগুনের চাহিদা বেশি থাকে। এবার কেন দাম এতো কম হলো বিষয়টি দেখতে হবে। যদি কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহেল কৃষি বিভাগ থেতে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে সহায়তা করা হবে।

এনাম/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়