ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে টেন্ডার জমাদানে বাধা ও মারধরের অভিযোগ

ফেনী সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১৭, ২৯ এপ্রিল ২০২৪  
যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে টেন্ডার জমাদানে বাধা ও মারধরের অভিযোগ

ফেনীর একটি নদীর ব্রিজের টোলের টেন্ডার জমাদানে বাধা ও আলী আক্কাস প্রকাশ আজাদ নামের এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সোনাগাজী উপজেলা যুবলীগের সদস্য সেন্টু মিয়ার বিরুদ্ধে। সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মহিপাল সড়ক ভবনের নিচতলায় ঘটনাটি ঘটে। ভুক্তভোগী থানায় অভিযোগ করেছেন।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আলী আক্কাস নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ মুসাপুরের মো. হানিফের ছেলে। বর্তমানে তিনি ফেনী শহরের পোস্ট অফিস রোডে বসবাস করছেন।

আরো পড়ুন:

অভিযুক্ত সেন্টু মিয়া সোনাগাজী উপজেলা যুবলীগের সদস্য। তিনি আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সোনাগাজী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আজিজুল হক হিরনের অনুসারী বলে জানা গেছে।

থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আজ সোমবার সাড়ে ১১টার দিকে আমান-ফারহান ট্রেডার্স নামের প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আলী আক্কাস সোনাগাজী- কোম্পানীগঞ্জের ছোট ফেনী নদীর ওপর নির্মিত ব্রিজের টোলের টেন্ডার নিয়ে ফেনী সড়ক ভবনে আসেন। মোটরসাইকেল পার্কিং করতে গেলে আগে থেকে অবস্থান নেওয়া সোনাগাজীর সেন্টু এবং পশ্চিম চরদরবেশ এলাকার টিপুসহ নাম না জানা আরও কয়েকজন আলী আক্কাসকে কথা আছে বলে বাইরে যেতে বলেন। বাইরে যেতে অস্বীকৃতি জানালে সেন্টু এবং টিপুর নেতৃত্বে আলী আক্কাসকে সড়ক ভবনের নিচে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে দেয়ালের সঙ্গে আলী আক্কাসের মাথা ধরে ধাক্কা দিয়ে আঘাত করেন। পরে তার কাছ থেকে মোবাইল, মানিব্যাগ, টেন্ডারের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ব্যাংক চেক, পে-অর্ডার ও হিসাবের খাতা নিয়ে ফেনী সার্কিট হাউজ রোডের একটি চায়ের দোকানে নিয়ে যান হামলাকারীরা। সেখানে ২০-৩০ জন আলী আক্কাসকে আটকে রেখে মারধর করেন। তখন সেন্টু মানিব্যাগ এবং হিসাবের খাতা ফিরিয়ে দিন। মোবাইল, টেন্ডারের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, চেক ও পে-অর্ডার ফেরত চাইলে এমপির কাছ থেকে নিস বলে জানান তারা।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আলী আক্কাস বাদী হয়ে সেন্টু এবং টিপুর নাম উল্লেখ করে এবং নাম না জানা আরও ৩০-৪০ জনকে আসামি করে ফেনী মডেল থানায়  অভিযোগ দেন।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমান-ফারহান ট্রেডার্সের মালিক মুসাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আলী আক্কাস ফেনী মহিপালের সড়ক ভবনে টেন্ডার জমা দেওয়ার জন্য গেলে তাকে মারধর করে আটকে রাখা হয়। টেন্ডার জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময় শেষ হলে তাকে ছেড়ে দেওয় হয়। এবিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি। এই ঘটনার বিচার চাই।

অভিযোগ অস্বীকার করে সেন্টু মিয়া বলেন, আমি শারীরিক অসুস্থতার জন্য বাসায় অবস্থান করছি। আমাকে হয়রানি করার জন্যই একটি পক্ষ এই ধরনের মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। এখানে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। 

আপনার প্রতিষ্ঠান থেকে টেন্ডার জমা দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে সেন্টু বলেন, মোরশেদুল হক মেনন এন্টারপ্রাইজ নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে আমরা যৌথভাবে ৪ জনে ব্যবসা করি। বাকি ৩ ব্যবসায়িক পার্টনার হিরন, টিপু ও মেনন। আজকে আমার প্রতিনিধি টেন্ডার জমা দিয়েছেন। তবে প্রতিনিধির নাম এ মুহূর্তে মনে পড়ছে না।

ফেনী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বিনয় কুমার পাল বলেন, সড়ক বিভাগের তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সোনাগাজী-কোম্পানীগঞ্জের ছোট ফেনী নদীর ওপর ব্রিজের টোলের টেন্ডার প্রক্রিয়াটি বাতিল করেছি। সেটি আবার নতুন করে ইজারা দেওয়া হবে।

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, একটি অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাহারায় ছিল। সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, সড়ক ভবন বা আশেপাশের এলাকায় এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। যাত্রা পথে কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা সেই বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি।

সাহাব/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়