ঢাকা     সোমবার   ২০ মে ২০২৪ ||  জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১

মেঘনায় ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রলারে যাত্রী পারাপার

শেখ মোহাম্মদ রতন, মুন্সীগঞ্জ  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫৩, ১০ মে ২০২৪   আপডেট: ০৯:৫৪, ১০ মে ২০২৪
মেঘনায় ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রলারে যাত্রী পারাপার

উত্তাল মেঘনা নদীতে চলাচল করছে ৩০টি ট্রলার। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া ঘাট হয়ে চর কিশোরগঞ্জ ঘাটে এসব ট্রলারে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। 

মুন্সীগঞ্জ সদরের চর কিশোরগঞ্জ ও গজারিয়া লঞ্চঘাট নৌরুটে গিয়ে দেখা যায়, ট্রলারে খেয়া পারাপার হচ্ছে মানুষ। এসব ট্রলারে নেই পর্যাপ্ত বয়া বা লাইফ জ্যাকেট। এতে এ নৌরুটে নিয়মিত যাতায়াতকারীরা দুর্ঘটনার শঙ্কায় রয়েছেন। 

সরেজমিনে জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জ জেলা শহর থেকে গজারিয়ার দূরত্ব মাত্র সাত কিলোমিটার। কিন্তু মুন্সীগঞ্জ সদর ও গজারিয়া উপজেলাকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে মেঘনা নদী। সেতু বা সড়ক পথে সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে যাওয়া-আসা করতে হয় এ উপজেলার মানুষের। তবে কেউ যদি মেঘনা নদীকে এড়িয়ে যাতায়াত করতে চায় তাহলে তাকে অন্তত ৫০ কিলোমিটার পথ ঘুরে আসতে হয় জেলা শহরে। 

জেলা শহর থেকে নারায়ণগঞ্জ কয়লাঘাট সেতু হয়ে সোনারগাঁও উপজেলা ঘুরে জনসাধারণকে গজারিয়ার গন্তব্যে পৌঁছাতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে চরকিশোরগঞ্জ থেকে গজারিয়াঘাট এলাকা পর্যন্ত একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন এই এলাকার মানুষ। কয়েকবার নদীতে সেতু নির্মাণের জন্য মাপজোখ হলেও সেতু নির্মাণ কাজ আলোর মুখ দেখেনি। তাই বাধ্য হয়ে উত্তাল ঢেউ, ঝড়, জলোচ্ছ্বাসের মধ্যেই এ নদী পারাপার হতে হয়। তাই যে কোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা। জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ না থাকায় জেলার অপর ৫টি উপজেলার সঙ্গে জেলা শহরের পূর্বাঞ্চলের গজারিয়াকে মেঘনা নদী বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। এতে জেলার ৫টি উপজেলার সঙ্গে গজারিয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। নৌপথ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অনেকেই অতিরিক্ত টাকা খরচ করে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ হয়ে মুন্সীগঞ্জে আসা-যাওয়া করে থাকে।

মুন্সীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী সরকারি হরগঙ্গা কলেজের শিক্ষার্থী আলেয়া আক্তার বলেন, প্রতিদিন শতাধিক শিক্ষার্থী এই ভয়াল মেঘনা নদী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাড়ি দিয়ে শিক্ষা গ্রহণ করতে আসে। আসছে বর্ষায় মেঘনা হয়ে উঠবে ভয়াবহ। এই নদী পাড়ি দিতে ট্রলার ছাড়া যাতায়াতের কোনো মাধ্যম নেই। কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষসহ শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে যাতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

এ পথ ব্যবহারকারী আমিরুল ইসলাম নামে এক যাত্রী বলেন, তাকে জেলা সদরে মাসে কয়েকবার যাতায়াত করতে হয়। বর্ষা মৌসুমে দোয়া দরুদ পড়ে চোখ বুজে নদীটা পার হন। মানুষকে যেন এ নদী পার হওয়ার জন্য নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, তিনি প্রশাসনের কাছে এ দাবি জানান। 

নজরুল ইসলাম নামে এক বৃদ্ধ বলেন, তার জমিসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একটু ঝামেলা। তাই মুন্সীগঞ্জ কোর্টে যাচ্ছেন। অনেক কষ্ট করে মেঘনা নদী পার হলেন। তবে ইঞ্জিনচালিত নৌযানগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়েই নদীতে যাতায়াত করতে হয় তাদের।

এ বিষয়ে গজারিয়ার ইউএনও কোহিনুর আক্তার বলেন, নৌপথটি যে ঝুঁকিপূর্ণ তা আমি নিজেই দেখেছি। চলাচলরত নৌযানগুলোতে পর্যাপ্ত বয়া ও লাইফ জ্যাকেট রাখার বিষয়ে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

/টিপু/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়