ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

গোখাদ্যের প্রভাব কোরবানির পশুর হাটে 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০৪, ১৫ জুন ২০২৪   আপডেট: ১১:০৬, ১৫ জুন ২০২৪
গোখাদ্যের প্রভাব কোরবানির পশুর হাটে 

গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কোরবানি পশুর হাটে। গরুর দাম বেশি হওয়ায় হাটগুলোতে দামাদামি করে বিক্রেতাদের সঙ্গে পেরে উঠছেন না ক্রেতারা। বাজেটের বাইরে দাম চলে যাওয়ায় তাই অনেক ক্রেতাই গরু ছেড়ে এখন ঝুঁকছেন ছাগলের প্রতি। অন্য বছরের তুলনায় এবার গরু বেচাকেনা কম বলে দাবি করেছেন বিক্রেতারা। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, কোরবানি পশুর হাটগুলো জমে উঠেছে শেষ মুহূর্তে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতিতে মুখরিত প্রতিটি হাট। সীমান্তবর্তী জেলা হলেও এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জের কোনো হাটেই ভারতীয় গরু নেই। সীমান্ত দিয়ে পাচার বন্ধ থাকায় দেশি গরু দিয়েই মিটছে এ জেলার কোরবানির চাহিদা। 

আরো পড়ুন:

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার বটতলা হাটে গরু কিনতে আসা মোজাম্মেল হোসেন জানান, গত বছরের তুলনায় এবার বেড়েছে গরুর দাম। তাই দামাদামি করেও পছন্দের গরু কিনতে পারেননি তিনি। দাম কিছুটা কম হওয়ার অনেকেই গাভী কিনছেন। 

অপর ক্রেতা আনোয়ারুল হুদা বলেন, ‘গত বছর ৮৫ হাজার টাকায় গরু কিনেছিলাম। ওই দামে এবার গরু পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েকটি হাট ও খামার ঘুরে দেখেছি। তাও গরু কিনতে পারিনি। তারা (খামারি) গোখাদ্যের দাম বেশি হওয়ার কথা বলে পশুর দাম বাড়িয়ে চাচ্ছেন।’

মামুনুর রশিদ নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ‘গতবছর কোরবানির জন্য ১ লাখ টাকায় যে গরু কিনেছিলাম, ঠিক সেই একই সাইজের গরু এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। যে কারণে সাধারণ মানুষ ছাগল কিনতে ঝুঁকছেন।’

রেজাউল নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘গত কয়েক বছরের ব্যবধানে গোখাদ্যের দাম বেড়েছে আড়াইগুণ। যার কারণে গরুর দাম বেড়েছে। বাজারে গরুর দাম বেশি হওয়ায় দামাদামি করেও গরু কিনতে পারছেন না ক্রেতারা। যারা ভাগে কোরবানি দেবেন তারাই বেশি দাম দিয়ে হলেও গরু কিনছেন। ঈদের সময় যত ঘনিয়ে আসছে বাজারে ক্রেতার সংখ্যা তত কমে আসছে।’

পশুর হাটে এখন গরু বিক্রি না হলে বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন খামারিরা। এসএম কামাল নামে এক খামারি বলেন, ‘কাঙ্খিত দামে গরু বিক্রি করতে না পারলে বড় ক্ষতি হয়ে যাবে আমাদের। কোরবানির সময় গরু বিক্রি করতে পুরো বছর ধরে টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। এখন গরু বিক্রি হচ্ছে খুবই কম।’ 

গরুর দাম বেশি হওয়ায় অনেকেই কোরবানির জন্য ছাগলের দিকে ঝুঁকছেন। কিন্তু সেখানেও দাম বাড়তির দিকে। বিক্রেতারা বলছেন, এরইমধ্যে হাটে আসা বেশিরভাগ ছাগল বিক্রি হয়ে গেছে। ফলে অবশিষ্ট ছাগলগুলোতে বিক্রেতারা অতিরিক্ত দাম হাঁকছেন। 

সদর উপজেলার বাসিন্দা শাহিন আক্তার বলেন, ‌১৪-১৫ হাজারের নিচে মিলছে না ছাগল। যা মিলছে তাও ফের আকারে অনেকটা খাটো। মানুষের আগ্রহ ১৮-২০ হাজার টাকার ছাগলে।

শিবগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা আব্দুর রব বলেন, ‘বাজার ভেদে ১০-১২ কেজি ওজনের ছাগলের দাম ১৪-১৫ হাজার হাজার টাকা। ১৫-১৭ কেজি ওজন মাংস হবে এমন ছাগলের দাম ২২-২৩ হাজার টাকা।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.গোলাম মোস্তফা বলেন, কোরবানির জন্য খামারিরা ১ লাখ ৮২ হাজার ১৬৭টি গবাদিপশু প্রস্তুত করেছেন। জেলার চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত আছে ৫২ হাজারেরও বেশি পশু। এরইমধ্যে উদ্বৃত্ত পশু জেলার বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেলার বাজারে দাম না পেলেও ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে গিয়ে খামারিরা গরুর দাম পাবেন। এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৭টি স্থায়ী ও দুটি অস্থায়ী হাটে পশু কেনাবেচা চলছে। 

মেহেদী/মাসুদ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়