ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

৫ বছর ধরে মায়ের খোঁজ রাখেন না প্রশ্নফাঁসে জড়িত প্রিয়নাথ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:১৩, ১১ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ১৮:২৫, ১১ জুলাই ২০২৪
৫ বছর ধরে মায়ের খোঁজ রাখেন না প্রশ্নফাঁসে জড়িত প্রিয়নাথ

গ্রেপ্তারকৃত প্রিয়নাথ রায়

সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে পিএসসির দুজন উপপরিচালক, একজন সহকারী পরিচালকসহ ১৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাদের অন্যতম প্রিয়নাথ রায়। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত প্রিয়নাথের দিনাজপুর ও ঢাকায় বাড়ি-গাড়িসহ অঢেল সম্পত্তি থাকলেও নিজ এলাকায় তেমন কোনো সম্পদ করেননি তিনি। সেখানে একটি জরাজীর্ণ বাড়িতেই বসবাস করেন প্রিয়নাথের বৃদ্ধা মা।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের রাইতু রায় ও রাজবালা দম্পতির সন্তান প্রিয়নাথ রায়। চার ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়। অভাবের সংসারে বেড়ে ওঠা প্রিয়নাথ এসএসসি পরীক্ষার সময় বাবাকে হারান। এইচএসসি’র পরে বন বিভাগে চাকরি নেন। ডিগ্রি পাস করে সেনাবাহিনীর অডিটর পদে যোগ দেন। এক সময় জড়িয়ে পড়েন চাকরির প্রশ্নফাঁস চক্রের সাথে। চাকরি দেওয়ার নাম করে অনেকের কাছ থেকে টাকাও নিয়েছিলেন প্রিয়নাথ। জড়িয়েছেন মামলায়ও। মামলার পর থেকে তাকে গ্রামে আসতে দেখেননি পড়শিরা।

স্থানীয়রা জানান, পরীক্ষার আগেই প্রায় ৪৫০ জনকে প্রশ্নপত্র দিয়ে চাকরি পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করা এই প্রিয়নাথ আগেও বিভিন্ন চাকরি পাইয়ে দিতে টাকার লেনদেন করতেন। চাকরি দেওয়ার শর্তে একেকজনের সাথে চুক্তি করতেন ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকায়। এসব করতে গিয়ে অনেকের কাছে টাকা নিয়ে চাকরি দিতে পারেনি। এসব বিষয়ে ৫ বছর আগে তার নামে মামলাও হয়েছে। তখন থেকে তিনি আর ঠাকুরগাঁও যাননি। এমনকি নিজের মায়ের খোঁজখবরও রাখেননি।

গ্রামের বাড়িতে একা থাকেন প্রিয়নাথের মা। অপকর্মে ছেলের জড়িয়ে পড়ায়, দায়ী করলেন পুত্রবধূকে। তবে দোষী হলেও ছেলের মুক্তি চান তিনি। 

প্রিয়নাথের মা রাজবালা বলেন, ‘দীর্ঘ পাঁচ বছর থেকে আমি ছেলের মুখ দেখিনি। জানি না ছেলে কী করে, কোথায় থাকে। এতকিছু শোনার পরে এখন ভয় হয়। ছেলের মুখ আর দেখতে পারব কিনা! মৃত্যুর আগে একটাবার ছেলের মুখখানি দেখতে চাই।’ 

স্থানীয় বাসিন্দা জয়দেব বলেন, ‘প্রিয়নাথের পরিবারে মা ছাড়া তারা সবাই ঠাকুরগাঁওয়ের বাইরে থাকে। এখানে ওর মা ছাড়া কেউ থাকে না। শুনেছি চাকরি দেওয়ার নামে সে টাকা নিত। পুলিশও এসেছে অনেকবার। কিন্তু সে বহুদিন ধরে বাড়িতে আসেনি।’

অপর প্রতিবেশী শামসুজ্জোহা জানান, এলাকার সবাই প্রিয়নাথকে ছিচড়ে চিটার বাটপার হিসেই জানে। তবে সে যে এতবড় কাণ্ডের সাথে জড়াতে পারে তা কেউ ভাবতে পারেনি। 

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বি এম ফিরোজ ওয়াহিদ বলেন, ‘চাকরি দেওয়ার নাম করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে বিভিন্ন জেলায় প্রিয়নাথের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। কয়েক বছর ধরে সে বাড়িতে আসে না।’

হিমেল/সনি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়