পর্যটকশূন্য কুয়াকাটা, এক সপ্তাহে ৬০ কোটি টাকার ক্ষতি
পটুয়াখালী (উপকূল) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
সাগড় পাড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন স্থানীয়রা। ছবি: রাইজিংবিডি
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সারাদেশে কারফিউ জারি করে সরকার। এতে জনমনে স্বস্তি ফিরে আসে। তবে কারফিউ বলবত থাকায় পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে কুয়াকাটা। গত এক সপ্তাহে ব্যবসায়ীদের ৬০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
পর্যটক সংশ্লিষ্টরা জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু পর থেকে কুয়াকাটায় পর্যটকের সংখ্যা কমতে থাকে। আর কারফিউ জারির পর একেবারে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ে। এক সপ্তাহ ধরে সৈকত এলাকায় বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা। ফাঁকা রয়েছে হোটেল-মোটেলের কক্ষ। অলস সময় পার করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট সব ব্যবসায়ী। দীর্ঘ সময় ধরে পর্যটকের আনাগোনা না থাকায় ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন তারা।
এর আগে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে প্রায় ১০ দিন পর্যটকশূন্য ছিল কুয়াকাটা। সেই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আগেই ফের লোকসানের মুখে পড়তে হলো। দ্রুত সময়ের মধ্যে সংকট কাটিয়ে উঠতে না পারলে পর্যটনশিল্পে ব্যাপক ধ্বস নামতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কুয়াকাটা সৈকতের আইসক্রিম বিক্রেতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘গত শুক্রবার থেকে পর্যটক নেই বললেই চলে। এই এক সপ্তাহে ৫০০ টাকাও বিক্রি করতে পারিনি। এতে লোকসানে পড়েছি।’
সৈকত সংলগ্ন গার্মেন্টসের জামাকাপড় বিক্রেতা হোসেন মিয়া বলেন, ‘আমার দোকানে দুই জন কর্মচারী। পর্যটক না থাকলেও দোকান প্রতিদিন খুলতে হয়। কারণ দোকান খোলা না রাখলে ইঁদুর সব জামাকাপড় কেটে ফেলে। বসিয়ে বসিয়ে কর্মচারীদের বেতন, দোকান ভাড়া ও কারেন্ট বিল গুনছি।’
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি শাহ আলম হাওলাদার বলেন, ‘কুয়াকাটায় প্রায় ৩০০ হোটেল রয়েছে। গত এক সপ্তাহে হোটেল ব্যবসায়ীদের ৩০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে। এর আগে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের সময়ও আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে পর্যটনশিল্পে ধ্বস নামতে পারে। আশা করছি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এবং আমরা লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারব।’
কুয়াকাটা ট্যুর অপারেটর অ্যাসোশিয়েসনের সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে কুয়াকাটার ১৬টি পেশার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ৫০-৬০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক না হলে মুখ থুবড়ে পড়বে পর্যটনশিল্প।’
উল্লেখ্য, পটুয়াখালীতে বর্তমানে ভোর ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সিথিল ও বাকি সময়ে কারফিউ বলবত রেখেছে জেলা প্রশাসন।
ইমরান/কেআই