ঢাকা     শুক্রবার   ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৫ ১৪৩১

কমেছে উপার্জন, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ

মাসুম লুমেন, গাইবান্ধা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৪০, ৭ আগস্ট ২০২৪   আপডেট: ২০:১৬, ৭ আগস্ট ২০২৪
কমেছে উপার্জন, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ

উপার্জন কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন গাইবান্ধা জেলার নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষজন। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে গত প্রায় ১৫ দিনের অস্থির পরিস্থিতির কারণে উপার্জন কমে গেছে তাদের। বিশেষ করে রিকশা, ভ্যান, সিএনজি, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক, দিনমজুর ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হকাররা বিপাকে পড়েছেন।

বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে কথা হয় গাইবান্ধা সদর উপজেলার তিনমাইল এলাকার রিকশা চালক মামুন মিয়ার সঙ্গে। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘গত ২৭ জুলাইয়ের পর থেকে আয় রোজগার তেমন নেই বললেই চলে। গতকাল সারাদিন ২০০ টাকা কামাই করেছি। আজ ৪০০ টাকা হইছে। এই কামাই দিয়ে কিভাবে সংসার চলে?’ 

সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের ঠাকুরের দিঘি গ্রামের ভাজাপোড়ার দোকানী মহেন্দ্র দাস (৪৫)। কেমন আছেন জানতে চাইলে? তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘সপ্তাহে কিস্তি আছে দুইদিন। মঙ্গলবার আর বৃহস্পতিবার কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে হয়। তীব্র গরম আর আন্দোলনের কারণে লোকজন ঘরের বাইরে কম বের হয়েছেন। আয় কমে তিন ভাগের এক ভাগে নেমেছে। কিস্তি পরিশোধ করবো নাকি চাল, ডাল কিনবো বুঝতে পারছি না।’ 

সদর উপজেলার কুপতলা বাজার থেকে গাইবান্ধা শহরে এসেছেন রিকশা চালক কফিল মিয়া। তিনি বলেন, ‘আমি ৩০–৩৫ বছর ধরে রিকশা চালই। কখনোই আগে এমন সংকটে পরিনি। একদমই কামাই নেই। যাত্রী কম থাকায় সারাদিনে ২৫০–৩০০ টাকার বেশি আয় হয় না। বাজারে আলু, পেঁয়াজের যে দাম, শুধু ভর্তা দিয়ে ভাত খাওয়াও কঠিন হয়ে গেছে।’ 

গাইবান্ধা ডিবি রোডের ভ্রাম্যমাণ কাপড় ব্যবসায়ী হাসান মিয়া। বাড়ি সদর উপজেলার পুলবন্দি এলাকায়। দোকানের পাশে দাঁড়িয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে তাকে। কোটা সংস্কার আন্দোলন ও কারফিউ ঘিরে চলমান পরিস্থিতিতে নিজের দুর্দশার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘গত ১৫-১৬ দিন ধরে কোনো ব্যবসা নাই। সারাদিনে আগে দুই-তিন হাজার টাকার কাপড় বিক্রি করলেও বর্তমানে ৫০০ টাকার কাপড়ও বিক্রি করতে পারছি না।’

শহরের বড় বড় গালামালের দোকানগুলোতে পণ্য খালাস করার কাজ করেন প্রায় পাঁচ শতাধিক দিনমজুর। তাদের একজন জানান, আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে তারা প্রায় সবাই বাড়িতে ছিলেন। দুই দিন ধরে দিনের বেলায় স্বাভাবিক কাজকর্ম করা যাচ্ছে। ব্যবসা-বানিজ্য ভালো না হওয়ায় দিনমজুরদের এখনো কেউ সেভাবে কাজে নিচ্ছেন না। ফতে তারা বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে করে কোনো রকমে জীবনযাপন করছেন।

সদর উপজেলার খোলাহাটি গ্রামের দিনমজুর সাইদুর মিয়া। দিনমজুর হওয়ায় যেদিন কাজ পান, সেদিন বাজার-সদাই করেন। অথচ এখন এক সপ্তাহ ধরে কাজ নেই তার। দোকান থেকে বাকিতে চাল, ডাল, আলু কিনে কোনো রকমে সংসার চালাচ্ছেন বলে জানান তিনি।

মাসুদ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়