ক্রসফায়ারে হত্যা
রাজশাহীর ডিআইজি আনিসসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর || রাইজিংবিডি.কম
রাজশাহী বিভাগের ডিআইজি আনিসুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বিচার বহির্ভূত হত্যার অভিযোগে যশোরে সাবেক পুলিশ সুপার ডিআইজি আনিসুর রহমানসহ ৮ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। যশোরের মণিরামপুর উপজেলার জয়পুর গ্রামের আবু সাঈদ নামে এক যুবককে আটকের পর ক্রসফায়ারে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত আবু সাঈদ নিহতের প্রায় এক দশক পর রোববার (১৮ আগস্ট) আদালতে এই মামলা করেন নিহতের স্ত্রী মোছা. পারভীনা খাতুন।
বর্তমানে আনিসুর রহমান ডিআইজি হিসেবে রাজশাহী রেঞ্জে কর্মরত রয়েছেন। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরান আহমেদ অভিযোগের তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজিকে আদেশ দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদীর আইনজীবী শহিদ ইকবাল হোসেন।
আসামিরা হলেন- যশোর জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, মনিরামপুর থানার তৎকালীন ওসি মোল্যা খবির আহমেদ, এসআই তাসমিম আহমদ, এসআই শাহিন, মনিরামপুর উপজেলার জালঝাড়া গ্রামের মৃত দূর্গাপদ সিংহের ছেলে সুব্রত সিংহ, জিনার আলীর ছেলে মতিয়ার রহমান, খোর্দ্দ গাংড়া (জালঝাড়া) গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে ফিরোজ আহমেদ ও জয়পুর গ্রামের মৃত নওশের আলী মেম্বারের ছেলে মুন্তাজ আলী।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, তার স্বামী আবু সাঈদকে ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর মনিরামপুর উপজেলার জয়পুর বাজারের পল্লী চিকিৎসক বজলুর রহমানের দোকান থেকে তৎকালীন পুলিশ সুপার আনিসুর রহমানের নির্দেশে পুলিশ আটক করে ও থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো।
খবর পেয়ে সাথে সাথে আবু সাঈদের স্ত্রী পারভীনা খাতুন থানায় গিয়ে সেখানে তার স্বামীকে পুলিশ হেফাজতে দেখতে পান। এরপর রাত ১২টার দিকে পারভীনা খাতুন ওসির সাথে দেখা করলে তিনি তাকে জানান, পুলিশ সুপারের নির্দেশে তার স্বামীকে আটক করা হয়েছে। তিনি তাকে পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলতে বলেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা মুন্তাজ আলীর সাথেও যোগাযোগ করতে বলেন ওসি।
আবু সাঈদকে পেন্ডিং মামলায় আটক করা হয়েছিলো। পরদিন সকাল ৬টার দিকে পারভীন খাতুন জানতে পারেন তার স্বামী আবু সাঈদকে পুলিশ হেফাজতে গুলি করে হত্যার পর লাশ থানায় এনে রেখে দেওয়া হয়েছে। পরে পারভীন খাতুন আরও জানতে পারেন পুলিশ শারীরিক নির্যাতন করে থানা থেকে বাইরে নিয়ে যান আবু সাঈদকে এবং যশোর-সাতক্ষীরা রোডের বেগারিতলায় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপর আসামিরা যোগসাজেসে আবু সাঈদ এর ময়নাতদন্ত করে লাশ বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
অভিযোগে মামলার বাদী দাবি করেছেন, পুলিশ হেফাজতে আবু সাইদের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা করতে গেলে মামলা না নিয়ে হুমকি-ধামকি দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে পরিবেশ অনুকূলে আসায় ন্যায় বিচারের স্বার্থে তিনি আদালতে এই মামলা দায়ের করেছেন।
রিটন/ইমন