ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মৃত হিসেবে এক মামলায় অব্যাহতির পর আরেক মামলায় জীবিত গ্রেপ্তার

নরসিংদী প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১৩:৪৯, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
মৃত হিসেবে এক মামলায় অব্যাহতির পর আরেক মামলায় জীবিত গ্রেপ্তার

নরসিংদীর আদালতে শ্যামল নামে এক হত্যা মামলার আসামি মৃত হিসেবে অব্যাহতি পাওয়ার পর আরেক মামলায় জীবিত গ্রেপ্তার হয়েছেন। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৬ সালের ১৬ মার্চ কমলা বানু নামে এক নারী খুন হন। এই অভিযোগে মনোহরদী থানায় কমলা বানুর ভাই আব্দুল বাতেন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সে মামলায় মনোহরদী উপজেলার খালিয়াবাইদ গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে শ্যামল ও নিহতের ছেলে শরীফ মিয়াকে অভিযুক্ত করে পুলিশ চার্জশিট প্রদান করেন। পরে মামলাটি বিচারের জন্য নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতে শুনানি হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। এরপর পুলিশ শ্যামল ও শরীফকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। পরে শ্যামল আদালত থেকে জামিন নিয়ে আর আদালতে হাজির হননি। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ৮ নভেম্বর নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতে শ্যামলকে মৃত দেখানো হয়। 

পরে চলতি বছরের ২০ মার্চ নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। উক্ত রায়ে আদেশ হয় যে, “মামলার ১নং আসামি শরীফ মিয়া (২৫) পিতা: আঃ গফুর, সাং- খালিয়াবাইদ, থানা: মনোহরদী, জেলা: নরসিংদীর বিরুদ্ধে পেনাল কোড ১৮৬০ এর ৩০২/৩৪ ধারার অধীনে আনীত অভিযোগ সাক্ষ্য প্রমাণ দ্বারা সন্দোহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় উক্ত আসামিকে আনীত অভিযোগের দায় হইতে বেকসুর খালাস প্রদান করা হলো। আসামি শ্যামল (২০), পিতা: লিয়াকত আলী, সাং- খালিয়াবাইদ, থানা: মনোহরদী, জেলা: নরসিংদী মৃত্যুবরণ করায় তাকে অভিযোগের দায় হইতে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।”

এ মামলার রায়ের পর অন্য একটি মামলায় গত ২৬ অক্টোবর (২০২৪) মনোহরদী থানা পুলিশ শ্যামলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করে। বিজ্ঞ আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। এরপর গতকাল বুধবার (২৭ নভেম্বর) আদালত প্রাঙ্গণসহ বিভিন্ন জায়গায় শ্যামলের মৃত হিসেবে অব্যাহতি ও গ্রেপ্তারের বিষয়টি ব্যপক আলোচনার বিষয়ে পরিনত হয়। 

এব্যাপারে অভিযুক্ত শ্যামলের মা দেলোয়ারা বেগম বলেন, “আমার ছেলেকে মৃত দেখিয়ে কেন খালাস দেওয়া হবে। আমার ছেলে কী মৃত! আমার ছিল জীবিত। এটা শত্রুতামি করে করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা এতো কিছু জানিনা।”

নরসিংদী জজ কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, “নরসিংদী আদালতে বেঞ্চ সহকারীর সাথে যোগাযোগ করে শ্যামল এর নথিসহ তার মৃত্যু সনদ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, নথিতে অন্যান্য কাগজপত্র রয়েছে, তবে মৃত্যুসনদ সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র নেই।” 

তিনি বলেন, “শ্যামল যে মারা যায়নি তার প্রমাণ আমরা পেয়েছি। তাকে মৃত্যুর কথা বলে খালাস দেওয়া হয়েছিল। সম্পূর্ণটাই ছিল সাজানো-গোছানো একটি নাটকের মতো। যা এখন স্পষ্ট।” 

এব্যাপারে মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুয়েল হোসেন বলেন, “চলমান একটি মামলায় শ্যামলকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ ৩টি মামলা রয়েছে এবং সে জীবিত।” 

ঢাকা/হৃদয়/টিপু

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়