ঢাকা     মঙ্গলবার   ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ২৬ ১৪৩১

কুষ্টিয়া গড়াই নদীর তীরে মাটিকাটার উৎসব

কাঞ্চন কুমার, কুষ্টিয়া || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০২, ৩০ নভেম্বর ২০২৪  
কুষ্টিয়া গড়াই নদীর তীরে মাটিকাটার উৎসব

কুমারখালী উপজেলার গড়াই নদীর তীরে মাটিকাটার উৎসব চলছে

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার গড়াই নদীর তীরে মাটিকাটার উৎসব চলছে। উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকা থেকে স্থানীয় প্রভাবশালীরা প্রতিদিন শত শত গাড়ি মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছেন। এতে নদীর পাড়, গ্রামীণ সড়ক ও কৃষিজমি হুমকিতে পড়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় প্রভাবশালী জামাল, মিঠু এবং যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবুল কালাম প্রকাশ্যে গড়াই নদীর তীর ঘেঁষে ব্যক্তি মালিকানাধীন ও সরকারি খাসজমির মাটি বিক্রি করে তা বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করছেন। এতে হুমকিতে পড়েছে নদীর পাড় ও কৃষিজমি। ভেঙে যাচ্ছে গ্রামীণ সড়ক। মাটিবাহী ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে গ্রামীণ সড়কে স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গোবিন্দপুর এলাকায় নদীর তীর ও সড়ক ঘেঁষে কলা, বেগুন, শাকসবজিসহ হরেকরকম ফসল চাষাবাদ হচ্ছে। আর গ্রামীণ কাঁচা সড়ক কেটে মাটিবাহী গাড়ি ওঠা-নামার পথ করা হচ্ছে। গড়াই নদীপাড়ের প্রায় ৫০ মিটার দূর থেকে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে তা ট্রাকে রাখা হচ্ছে। সেখানে বেশ কয়েকজন শ্রমিক ও কয়েকটি লাটা হাম্বা গাড়ি রয়েছে। তবে শ্রমিকরা মাটিকাটার বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

আরো পড়ুন:

গড়াই নদীর পাড় ঘেঁষে মাটিকাটা গাড়ি চলাচলের পথ তৈরি করছিলেন স্থানীয় কৃষক মজিবর রহমান। তিনি বলেন, ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি, এখানে ভালো ফসল হয় না। সেই জন্য প্রতি গাড়ি ২৮০ টাকা দরে ভাটায় মাটি বিক্রি করছেন তিনি।

গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক টুটুল হোসেন বলেন, অবৈধভাবে মাটিকাটায় অন্যান্য কৃষি জমি হুমকির মুখে পড়ছে। রাস্তাঘাট ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। নদীর পাড় ঘেঁষে অবৈধভাবে মাটিকাটা বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, শীতকাল এলেই নদীর পাড় ঘেঁষে মাটি-বালু কাটা হয়। শত শত অবৈধ গাড়ি চলে সড়কে। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে। তিনিও নদীর তীর থেকে মাটিকাটা ও গ্রামীণ সড়কে অবৈধ গাড়ি চলাচল বন্ধের দাবি জানান।

অভিযোগ অস্বীকার করে যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবুল কালাম আজাদ জানান, কে বা কারা মাটি কাটছে তা তিনি জানেন না। দীর্ঘদিন ধরে তিনি সেখানে যান না। অপর অভিযুক্ত জামাল হোসেন বলেন, তিনি টাকা দিয়ে কৃষকের কাছ থেকে মাটি কিনে ভাটায় বিক্রি করছেন। এটা অবৈধ কিছু নয়।

কুষ্টিয়া পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইয়ামিন হক বলেন, চলতি বছরে ওই এলাকায় নদী শাসন করে পাড় বাধা হয়েছে। মাটি কাটলে পাড় ধসে যেতে পারে। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হবে।

ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে পুকুর খনন বা মাটিকাটাও আইনে নিষেধ রয়েছে উল্লেখ করে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিরুল আরাফাত বলেন, দ্রুতই গড়াই নদী তীরে অবৈধভাবে মাটিকাটায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়