মোহনায় প্রাচীর তুলে দখল, হুমকিতে সুতিয়া নদী
গাজীপুর পূর্ব প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নান্দিয়া সাঙ্গুন এলাকায় তিন নদীর মোহনায় যেন দখলের উৎসব লেগেছে। ব্রহ্মপুত্র, শীতলক্ষ্যা ও সুতিয়া নদীর মোহনায় উঁচু সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে বিস্তীর্ণ চরভূমি দখলে নেওয়ার ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। ফলে স্বচ্ছ জলের নদী সুতিয়া হুমকির মুখে পড়েছে। অন্যদিকে ভয়াবহ নদীভাঙনের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
নান্দিয়া সাঙ্গুন গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সুতিয়া নদীর শুরুর অংশে নির্মাণ করা হয়েছে দীর্ঘ উঁচু প্রাচীর। ইতোমধ্যে এর একটি অংশের দেয়াল তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। অপর অংশে কাজ চলছে। নদীর বুক চিরে দাঁড়িয়ে থাকা প্রাচীর নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
স্থানীয়রা জানান, নদীর চরে একটি মাদ্রাসার সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি ওয়াহিদুর রহমান এক বিঘারও বেশি জায়গা দখল করে নিয়েছেন। বর্ষা এলেই যেখানে থইথই করে পানি, সেখানে এখন স্থায়ী নির্মাণকাজ চলছে। অথচ কয়েক বছর আগেও জায়গাটিতে ছিল প্রবল স্রোত।
নান্দিয়া সাঙ্গুন গ্রামের বাসিন্দা মনিরুজ্জামান বলেন, “মাদ্রাসা তৈরির জায়গাটা নদীর অংশ। এখনও বর্ষায় পুরোদমে পানি আসে। এখানে প্রাচীর দিলে স্রোতের চাপ অন্যদিকে যাবে, তখন ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিতে পারে।’’
অন্য এক বাসিন্দা মজিবুর রহমান বলেন, ‘‘যিনি দখল করেছেন তিনি সমাজে প্রভাবশালী। আগে যেখানে বিশাল নদী ছিল, আজ সেখানে দেয়াল তুলে মাটি ভরাট হচ্ছে। এ ভাবে চলতে থাকলে একদিন নদীই হারিয়ে যাবে।’’
দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত ওয়াহিদুর রহমান বলেন, ‘‘আমি আমার নিজস্ব জমিতেই প্রাচীর নির্মাণ করছি। কয়েকটি অংশ নদীর হতে পারে—মাপজোখ হয়নি। তবে বর্তমানে এখানে নদী নেই।’’
এ বিষয়ে নদী পরিব্রাজক দল শ্রীপুর শাখার সভাপতি সাঈদ চৌধুরী তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘‘এটি স্পষ্ট নদী দখল। নদীর চর বা জমি ব্যক্তিগতভাবে দখলের কোনো সুযোগ নেই। নদী জনগণের সম্পদ। আমরা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ দাবি করছি।’’
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজীব আহমেদ বলেন, “বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা যাচাই করা হবে এবং দখল প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/রফিক//