ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

জাহাজে ৭ খুনের কারণ জানাল র‌্যাব

কুমিল্লা প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৩, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১৩:২১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
জাহাজে ৭ খুনের কারণ জানাল র‌্যাব

বাগেরহাটের চিতলমারী থেকে আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব

দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা না পাওয়া ও জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়ার দুর্ব্যবহারের কারণে চাঁদপুরে সাত জনকে হত্যা করা হয় বলে র‌্যাব জানিয়েছে। 

চাঁদপুরের হাইমচরের মাঝিরচর এলাকায় এম ভি আল-বাখেরা জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় আজ আকাশ মণ্ডল ইরফান নামে একজনকে বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। 

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে কুমিল্লা নগরীর শাকতলা র‍্যাব কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান র‍্যাব-১১ এর উপ-অধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেন।  

তিনি জানান, গ্রেপ্তারকৃত আকাশ মণ্ডলের বাড়ি বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলায়। তার বাবার নাম জগদীশ মণ্ডল। তিনি আট মাস ধরে এমভি-আল বাখেরা জাহাজে চাকরি করছিলেন। 

তিনি বলেন, “আকাশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তিনি জানান, জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়ার দুর্ব্যবহার, বেতন-বোনাসে অনিয়ম এবং কর্মচারীদের প্রতি অবহেলা তাকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। এ থেকেই আকাশ প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৮ ডিসেম্বর তিনি তিন পাতা ঘুমের ওষুধ কিনে রাখেন।”

‘‘পরে, ঘটনার দিন ২২ ডিসেম্বর রাতে আকাশ তরকারির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে সবাইকে অচেতন করেন। রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে মাস্টারকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেন। পরে অন্যরা টের পেয়ে যেতে পারে—এমন আশঙ্কায় সে একে একে ছয় জনকে হত্যা করেন।” 

তিনি জানান, আকাশের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, হত্যাকাণ্ডের পর সে নিজেই জাহাজ চালিয়ে মাঝিরচরে পৌঁছান। পরদিন সকালে ট্রলারে করে পালিয়ে যান এবং বাগেরহাটের চিতলমারিতে আত্মগোপন করেন।

র‍্যাব আরও জানায়, আকাশের কাছ থেকে রক্তমাখা জিন্স, মোবাইল ফোন, ঘুমের ওষুধের খালি পাতা এবং অন্যান্য আলামত জব্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে অন্য কোনো সহযোগী ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এদিকে, মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে এ ঘটনায় অজ্ঞাত ১০ জনকে আসামি করে হাইমচর থানায় মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌ-পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান। লাইটার জাহাজ মালিকদের পক্ষে মো. মাহাবুব মোর্শেদ বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। 

চাঁদপুরের নৌ-পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, “মামলায় খুন ও ডাকাতির অভিযোগ এনে তা চাঁদপুর সদরের হরিণাঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”

গত ২৩ ডিসেম্বর চাঁদপুরের মাঝিরচর এলাকার একটি জাহাজ থেকে পাঁচ জনের মরদেহ এবং তিন জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে দুই জন মারা যান।

এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ঢাকা/রুবেল/ইভা 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়