ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ১ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

কুমিল্লায় আলুর বাম্পার ফলন, দাম নিয়ে শঙ্কা

কুমিল্লা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২৫, ১১ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ১০:৪২, ১১ জানুয়ারি ২০২৫
কুমিল্লায় আলুর বাম্পার ফলন, দাম নিয়ে শঙ্কা

কুমিল্লা জেলায় এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। উন্নত জাতের আলু আবাদ করে বেশি ফলন পেয়েছেন তারা। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবারের মৌসুমে আলুর অতিরিক্ত উৎপাদন হওয়ায় কুমিল্লার ১৭ উপজেলায় আলু চাষিদের আনন্দের মাত্রাটাও অনেক বেশি। অতীতের চেয়ে আলুর উৎপাদন বেশি হলেও ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন চাষিরা। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, আবহাওয়া ভালো ও বন্যায় চরের কৃষি জমিতে পলি জমার কারণে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বরাদ্দ না থাকায় অন্যভাবে সহায়তা করতে না পারলেও কৃষি কর্মকর্তারা পরামর্শ দিয়ে কৃষকদের সহযোগিতা করছেন। পুরো জেলায় চলতি মৌসুমে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার ২৫৪ হেক্টর জমিতে। এ পর্যন্ত চাষ হয়েছে ৮ হাজার পাঁচশত দশ হেক্টর জমিতে।

 

কৃষকরা বলছেন, জমি থেকে আলু তুলতে শ্রমিকদের খরচ বহন করতে হিমশিম খেতে হয়। এছাড়া জেলার বাইরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় স্থানীয় মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে আলু বিক্রয় করতে হয়। ফলে কৃষকের চেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগী আলু ব্যবসায়ীরা। 

কুমিল্লার গোমতি নদী চর এলাকার আলু চাষি রাজিব সাহা বলেন, “বাজারে হঠাৎ করে আলুর দাম কমে যাওয়ায় তেমন লাভ হচ্ছে না। গত কয়েকদিন আগেও প্রতি বস্তা (৮০ কেজি) আলু প্রকার ভেদে ২৮শ থেকে ৩ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। এখন আলু বিক্রয় হচ্ছে ২ হাজার টাকা বস্তা। আলুর উৎপাদন অনেক বেশি হলেও ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।”

 

একই এলাকার আলু চাষি দুলাল জসিম সর্দার বলেন, “মাত্র তিন বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। আলু তোলা শুরু হয়েছে। সম্পূর্ণ আলু তোলার পর বোঝা যাবে লাভ-ক্ষতি। যদিও আমরা জমি থেকেই সরাসরি আলু ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করায় তেমন একটা বাজার পাই না।” 

চান্দিনা এলাকার আলু চাষি মাহফুজ আহমেদ বলেন, “দুই বিঘা জমিতে ৪০ বস্তা (৮০ মন) আলু উৎপাদন হয়েছে। বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকার উপরে। আর ২০ বস্তা আলু বিক্রি হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। সব খরচ বাদ দিয়ে বিঘা প্রতি ৮-১০ হাজার টাকা লাভ হতে পারে।” 

দেশের বৃহত্তম কাঁচা বাজার চান্দিনার নিমসার বাজারের মধ্যস্বত্বভোগী আলু ব্যবসায়ী শফিকুল রহমান বলেন, “আমরা কৃষকের জমি থেকে আলু কিনি। এরপর সেগুলো পরিষ্কার করে বাজারে নিয়ে বিক্রয় করি। সেই আলু রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় চলে যায়। আলু বিক্রিতে আমাদের ভালোই লাভ হয়।”

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, “কুমিল্লার সবক’টি উপজেলার মাটি আলু চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এবারে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি আলু উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আমাদের কর্মকর্তাসহ মাঠকর্মীরা সার, কীটনাশক প্রয়োগের ব্যাপারে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন। যা এবারের বাম্পার ফলনেই এ চিত্র ফুটে উঠেছে।” 

তিনি আরো বলেন, “কুমিল্লার অনেক কৃষক পুরনো জাতের ডায়মন্ড আলু চাষ করে থাকেন। যদিও ডায়মন্ড আলুর উৎপাদন তুলনামূলক কম হয়। আমরা তাদেরকে ভালো জাতের আলু চাষ করার পরামর্শ দিয়ে থাকি।”

ঢাকা/রুবেল/ইমন

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়