ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৫ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

ঢাবিতে শহীদ ওসমান হাদির মরদেহ 

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৮, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫   আপডেট: ১৬:১৯, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
ঢাবিতে শহীদ ওসমান হাদির মরদেহ 

জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা শেষে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির মরদেহ নেওয়া হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি)। সেখানে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে তাকে সমাহিত করা হবে। 

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ৩টার দিকে তার মরদেহ ঢাবিতে নেওয়া হয়। 

এর আগে দুপুর আড়াইটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তার জানাজা হয়। এতে অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা, বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও তার দলের নেতাকর্মীসহ লাখ লাখ মানুষ।

জানাজার আগে দেওয়া বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “মাথা নত নয়, বরং উঁচু রেখে দাঁড়ানোর সাহস ও নির্ভীক জীবনের জয়গান গেয়ে গেছেন শরিফ ওসমান হাদি। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন সবার বুকে থাকবে ওসমান হাদি।” 

তিনি বলেন, “লাখ লাখ মানুষ হাদির কথা শোনার জন্য এসেছে। আমরা ওসমান হাদিক বিদায় দিতে আসিনি। তিনি আমাদের বুকের মধ্যে আছে ও থাকবে।”

জানাজা শুরুর আগে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, “সারা দেশ আজ কাঁদছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ হাদির জন্য সারা দেশে মসজিদগুলোতে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।” 

এ সময় তিনি হাদির জীবন বৃত্তান্ত পাঠ করেন এবং তার জন্য দোয়া করেন। এরপর ইনকিলাব মঞ্চ থেকে বক্তব্য রাখা হয়।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজা ও দাফন শেষে উপস্থিত জনসাধারণকে শাহবাগে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। হাদির জানাজার আগমুহূর্তে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল জাবের এ ঘোষণা দেন।

কীভাবে খুনিরা পালিয়ে গেল সে বিষয়ে জাতির কাছে প্রশ্ন রাখেন হাদির বড় ভাই। হাদি যে শিশু সন্তান রেখে গেছেন সে বিষয়েও কথা বলেন তিনি।

হাদির জানাজায় অংশ নিতে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে এসে জড়ো হতে থাকেন হাজারো মানুষ। দীর্ঘ সময় সারিবদ্ধভাবে অপেক্ষা করার পর সকাল সাড়ে ১০টায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাধারণ জনতাকে দক্ষিণ প্লাজায় প্রবেশের অনুমতি দেন। ভিড় সামাল দিতে প্রতিটি প্রবেশপথে কড়াকড়ি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে জানাজায় অংশ নিতে ছুটে আসেন মানুষ। লাখ লাখ মানুষর উপস্থিতিতে জনসমুদ্রে পরিণত হয় সংসদ ভবন এলাকা।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে জাতীয় সংসদ ভবনসহ ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়।

দুপুর ১টা ৫মিনিটে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল থেকে লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে করে তার মরদেহ নেওয়া হয় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়। এর আগে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হাদির মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।

হাদির মৃতুতে রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করা হচ্ছে আজ। দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রয়েছে।

এর আগে শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হাদির মরদেহ ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। সেখান থেকে মরদেহ জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের হিমঘরে নেওয়া হয়।

ঢাকা/রায়হান/ইভা 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়